ওয়াসা ভবন, ১ম তলা, ৯৮ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ
ফোনঃ 01767000000
Design & Developed by:
এ সম্পর্কিত আরও খবর g
কখনো নীল আকাশের নীচে হেটেছেন রোমান্টিক নায়ক হয়ে, কখনো হাজির হয়েছেন পিতার বেশে আবার কখনো হয়েছেন সংগ্রামী যোদ্ধা। অভিনয় দিয়েই সাধারণ থেকে হয়েছেন কিংবদন্তি। নায়ক থেকে উপাধি পেয়েছেন নায়ক রাজ। তিনি বাংলাদেশের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক। ষাটের দশকের ব্যস্ত রোমান্টিক নায়ক রহমান দুর্ঘটনায় পা হারানোর পর তখনকার রোমান্টিক নায়কের অভাব পূরণ করতে চলচ্চিত্রে পা রেখেছিলেন রাজ্জাক। আর তার প্রথম নায়িকা ছিলেন সুচন্দা। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পাওয়া জহির রায়হান পরিচালিত বেহুলা ছবিটি দারুণ ব্যবসা করে। তবে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে তখন ভারত থেকে ছবি আসা নিষিদ্ধ হওয়ায় উত্তম-সুচিত্রা জুটির বিকল্প খুঁজতে লাগল মানুষ। রাজ্জাক-সুচন্দাই হয়ে উঠলেন তখন সেই বিকল্প। এরপর জুটি হিসেবে সবচেয়ে আলোচিত ছিল রাজ্জাক-কবরী। উত্তম-সুচিত্রার মতো এই জুটির ছবিও ছিল সেই সময়কার তারুণ্যের ক্রেজ। সুভাষ দত্তের আবির্ভাব চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই এই জুটি প্রতিষ্ঠিত হয়।সাদাকালো থেকে রঙিন পর্দা, রাজ্জাক ছিলেন যেন প্রতিটা চরিত্রেই সেরা। রাজ্জাকের চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। নায়ক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ হয় জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে সুচন্দার বিপরীতে। তারপর থেকে একাধারে অভিনয়, প্রযোজনা ও পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গন দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। আগুন নিয়ে খেলা’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘ওরা ১১ জন’, ‘আলোর মিছিল’, ‘ছুটির ঘণ্টা’সহ মোট ৩০০টির বেশি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেশ দাপটের সঙ্গে ঢালিউডে সেরা নায়ক হয়ে অভিনয় করেন তিনি। রাজ্জাক পরিচালনা করেছেন ১৬টি চলচ্চিত্র। গড়ে তোলেন রাজলক্ষী প্রোডাকশন হাউজ। প্রযোজক হিসেবে তার যাত্রা হয় ‘রংবাজ সিনেমার মাধ্যমে। এরপর বেশ কিছু সিনেমা প্রযোজনাও করেছেন এই কিংবদন্তি। দেশের শিল্প-সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে নায়করাজ ২০১৫ সালে ‘স্বাধীনতা পদক’ পুরস্কারে ভূষিত হন। শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন মোট পাঁচবার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পান ২০১৩ সালে। এছাড়াও বাচসাস পুরস্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালের ২১ আগস্টে চলে গেছেন নায়করাজ রাজ্জাক। চলচ্চিত্রকে জীবনভর উৎসর্গ করা এই মানুষটি চলে গেলেও তার প্রতিটি চরিত্র, প্রতিটি দৃশ্য, প্রতিটি হাসি আজও ভক্তদের মনে বেঁচে আছে। আর থাকবে চিরকালই। এমি/এটিএন বাংলা