ওয়াসা ভবন, ১ম তলা, ৯৮ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ
ফোনঃ 01767000000
Design & Developed by:
এ সম্পর্কিত আরও খবর g
কমেডি থেকে রোমান্টিক ঘরানা, কোথায় নেই তার বিচরণ? কখনো বিখ্যাত নায়কদের লিপে, কখনো নিজেই পর্দা হাজির হয়ে দিয়েছেন কণ্ঠ। গানে গানে, হাসি আনন্দে মাতিয়ে রাখতেন দর্শকদের। শুধু তাই-ই নয় যুগে যুগে তার গাওয়া গান, সিনেমা মুগ্ধ করেছে কোটি কোটি ভক্তকে। তিনি আর কেউ নন, তিনি কিশোর কুমার। বলিউডের ইতিহাসে কিশোর কুমার নামটা উচ্চারণ করলেই যেন ভেসে ওঠে এক অদ্ভুত বৈপরীত্যের দোলাচলের ছবি। পর্দায় তিনি ছিলেন মজার মানুষ, গানে ছিলেন অদ্বিতীয়। হাসতে হাসতে গান গাওয়া, হঠাৎ রেকর্ডিং ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া, কিংবা টাকা হাতে না পেলে গানের সুরই না তোলা, সবই যেন তার এক অদ্ভুত রূপকথার অংশ। কিন্তু এই হাসির আড়ালে লুকিয়ে ছিল এমন অবর্ণনীয় বেদনা, যা শুধু কাছের মানুষরাই দেখেছেন। কিন্তু বাস্তব জীবনে ছিলেন এক রহস্যময় চরিত্র, যিনি একদিকে ছিলেন কোটি কোটি ভক্তের প্রিয়মুখ, অন্যদিকে ভেতরে ভেতরে পুড়ছিলেন এক অদ্ভুত বিষণ্নতায়, নিঃসঙ্গতায়। তার ব্যক্তিগত জীবন ছিল অদ্ভুত বেদনাভরা এক রোমান্টিক এক সিনেমার মতো। মধুবালার সঙ্গে বিয়ের গল্প আজও শিহরণ জাগায়। কিন্তু সেই আকাশ সমান ভালোবাসাও বেশিদিন টেকেনি। এরপরও তিনি একে একে চারটি বিয়ে করেছেন, প্রতিটি সম্পর্কেই ভরপুর ছিল আবেগ, ঝড় আর অবশেষে বিচ্ছেদে মোড়ানো এক একটি ধূসর গল্প। কিশোরের খামখেয়ালি নিয়ে বলিউডে তৈরি হয়েছিল অসংখ্য কিংবদন্তি। কেউ কেউ বলতেন—রেকর্ডিং স্টুডিওতে এসে তিনি যদি সুর পছন্দ না করেন, তবে গান না গেয়েই চলে যেতেন। আবার কখনো শো-এর আগের রাতে সিদ্ধান্ত নিতেন—আমি গান গাইব না।” তবুও, যখন তিনি গাইতেন, তখন পৃথিবী থমকে যেত। নিজের জনপ্রিয়তা নিয়ে কিশোরের মনোভাব ছিল বেশ ভিন্ন। বলতেন, 'লোকেরা আমার কণ্ঠস্বরকে ভালোবাসে, আমাকে নয়।' জীবনের শেষদিকে আরও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। সন্ধ্যায় সমুদ্রতটে একা হাঁটতেন, কখনো গুনগুন করতেন, কখনো ঢেউয়ের সঙ্গে কথা বলতেন। কেউ ভাবতেন তিনি রিহার্সাল করছেন, আবার কেউ বলতেন প্রকৃতির মধ্যেই তিনি খুঁজে নিতেন শান্তি। ১৯৮৭ সালের ১৩ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বিদায় নিয়েছিলেন এ কিংবদন্তি। আজও কোটি ভক্ত যখন ও মেরে দিল কে চ্যান কিংবা জিন্দেগি এক সাফার শোনেন, মনে হয়—কিশোর যেন বেঁচে আছেন, তাদের হৃদয়ের ভেতর। হয়তো এ কারণেই বলা যায়—কিশোর কুমার শুধু একজন গায়ক বা অভিনেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন এমন এক জীবনযোদ্ধা যিনি গানে গানে আজও অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছেন কোটি ভক্তকে। হাসির আড়ালে তিনি কাঁদতে শিখিয়েছেন, আবার কান্নার ভেতরও গান শুনতে শিখিয়েছেন। সুরে সুরে ভক্তদের বলে গেছেন, রোতে রোতে হাসনা সিখো হাসতে হাসতে রোনা.. এমি/এটিএন বাংলা