ভারতে ভয়াবহ হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি

ভারতে ভয়াবহ হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি

আন্তর্জাতিক

ভারতে করোনার দ্বিতীয় সংক্রমণের ঢেউ আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। শুধু মহারাষ্ট্রেই সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার প্রায় ২৩ শতাংশ। ভীতিকর পরিস্থিতি পাঞ্জাব, দিল্লি, ও মধ্যপ্রদেশে। রাজ্যগুলোতে এই হারে সংক্রমণ হতে থাকলে ভারতের করোনা পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ মৃত্যুহার কমানোর উপরে বিশেষ ভাবে জোর দিয়েছেন। রাজেশ ভূষণ বলছেন, সংক্রমিত ব্যক্তিকে দেরিতে হাসপাতালে নিয়ে আসার কারণে মৃত্যু ঘটছে কি না, তা সবার আগে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। যদি তাই হয়, তাহলে বুঝতে হবে নজরদারিতে সমস্যা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা যথাযথ প্রোটোকল মেনে চলছেন কি না, সংক্রমিত ব্যক্তি হাসপাতালে ঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন কি না, বিশেষ করে এক জন করোনা রোগীর চিকিৎসার প্রশ্নে ন্যূনতম যে প্রোটোকলগুলো রয়েছে যেমন অক্সিজেন, শয্যা, অক্সিজেনযুক্ত শয্যা ইত্যাদি রয়েছে কি না, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে কি না, এ সবই পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

সংক্রমণের হার কমাতে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে টিকাকরণে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে সমস্ত ভারতবাসী কভিডের টিকা নিতে পারবেন। যে জেলাগুলিতে সংক্রমণের হার বেশি, সেখানে ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদের ১০০ শতাংশ টিকাকরণ নিশ্চিত করতে বলেছে কেন্দ্র।

সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রুখতে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে কন্টেনমেন্ট জোন গঠনের উপরে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রতিটি কন্টেনমেন্ট জোনকে পরিবর্তনশীল হতে হবে, প্রয়োজনে যাতে তার আকার বড় বা ছোট করা সম্ভব হয়। প্রতিটি কন্টেনমেন্ট জোন সংক্রমিত এলাকার যথাসম্ভব বেশি সংখ্যক বাড়িকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কন্টেনমেন্ট জোন ও তার বাইরের এলাকায় রোজ কত নতুন সংক্রমণ হচ্ছে, সেই তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলোকে। যদি কন্টেনমেন্ট জোনের বাইরে সংক্রমণ বেশি থাকে, সে ক্ষেত্রে তার পরিধি বড় করার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা ছাড়া সংক্রমিত এলাকায় আর কারও প্রবেশ ও বের হওয়া বন্ধ করায় নজর দিতেও বলা হয়েছে রাজ্যগুলোকে।

কোনও রাজ্যের কোনও বিশেষ প্রান্ত বা এলাকা থেকে সংক্রমিত রোগী বেশি আসছেন কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য ম্যাপিং করতে বলা হয়েছে। এর ফলে সংক্রমণের কারণ খুঁজতে সুবিধে হবে রাজ্যের। করোনা পরীক্ষা, বিশেষ করে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার অনুপাত বাড়ানো, মাস্ক পরা-সহ কভিড সতর্কতাবিধি মেনে চলার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। মাস্ক না-পরলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানার মতো কড়া পদক্ষেপ করার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সূত্র: আনন্দবাজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *