এটিএন বাংলা, ওয়াসা ভবন, ২য় তলা, ৯৮ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ
ফোনঃ +88-02-55011931
এ সম্পর্কিত আরও খবর
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় অংশে গতি ফিরেছে যানবাহনের। দীর্ঘদিন ধরে যেখানে যানজট ছিল স্বাভাবিক দৃশ্য, সেখানে এখন গাড়ির চাপ থাকলেও যানজট নেই। সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের পরিদর্শন ও যানজট নিরসনে দেওয়া নির্দেশনার পর রাতারাতি পাল্টে গেছে চিত্র। শৃঙ্খলা ফেরাতে সড়কে বসানো হয়েছে বিভাজক। একইসঙ্গে চলছে সংস্কার কাজও। আর তা তদারকি করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত বিদ্যমান মহাসড়কটি চার লেনের জাতীয় মহাসড়কে উন্নীত করার প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের পর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। পাঁচ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ করছে ভারতীয়
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। তবে শুরু থেকেই নানা সংকটের মুখে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি। এতে কাজ চলে ধীরগতিতে। ফলে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ। কয়েক দফায় বাড়ানো হয়েছে মেয়াদ- যা শেষ হচ্ছে আগামী ২০২৭ সালের জুন মাসে। আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন প্রকল্পের ১২ কিলোমিটার অংশ রয়েছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল বিশ্ববরোড মোড় পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশের কাজ এখনও পুরোপুরি শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মাত্র ৬২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আর্থিক জটিলতার কারণে এ অংশের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ রাখে ঠিকাদার। ফলে সড়কে নিয়মিত সংস্কার কাজ না হওয়ায় খানাখন্দ তৈরি হয়। যান চলাচালে ধীরগতি দেখা দেয়। এতে প্রতিনিয়ত আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল-বিশ্বোরোড পর্যন্ত অংশে তীব্র যানজট তৈরি হতো। যানজটের কারণে ১২ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে যানবাহনগুলোর সময় লাগত ৪-৬ ঘণ্টা। কোনো কোনো সময় তা ৮-১০ ঘণ্টাও লেগে যেত। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তেন যাত্রীরা। এ অবস্থায় আশুগঞ্জ গোলচত্বর ও সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ের সংস্কার কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে ১২ সদস্যের একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়।গত ৮ অক্টোবর মহাসড়কের বেহাল অংশ পরিদর্শনে গিয়ে যানজটের কবলে পড়েন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। পরে গাড়ি ছেড়ে মোটরসাইকেলে করে সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ে যান তিনি। যানজটের জন্য বেহাল মহাসড়কের চেয়ে ট্রাফিকের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেন এবং মনিটরিং কমিটির ১২ কর্মকর্তাকে সার্বক্ষণিক সরাইল-বিশ্বরোড মোড়ে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেন। এ নির্দেশনার পরই পাল্টাতে শুরু করে চিত্র। সোমবার (১৩ অক্টোবর) পুরো দিনই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দেখা গেছে, সরাইল-বিশ্বরোড মোড় ও আশপাশে যানজট নেই। তবে যানবাহনের কিছুটা চাপ রয়েছে। এ অংশে স্বাভাবিক গতিতেই যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়া আশুগঞ্জ গোলচত্বরেও যান চলাচল স্বাভাবিক। পরিবহন চালকরা জানান, গত কয়েক মাস যানজটের কারণে অসহনীয় কষ্ট করতে হয়েছে। ১০-১২ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে সিলেট পৌঁছানো যায়নি। কিন্তু গত দুদিন ধরে আর আগের সেই যানজট সেই। এখন দ্রুতই বিশ্বরোড মোড় ও আশুগঞ্জ গোলচত্বর পার হওয়া যাচ্ছে। সড়ক বিভাগ এবং ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে রাস্তার কাজ বিলম্বিত হচ্ছে। আপাতত যানজট নিরসন হলেও এর স্থায়ী সমাধান দরকার। এজন্য দ্রুত সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করতে হবে। অন্যথায় আবারও যে কোনো সময় যানজটের কবলে পড়তে হবে। চার লেন মহাসড়ক প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তিনটি প্যাকেজে চলছে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। প্যাকেজ-১ এর কাজ ৬২ শতাংশ শেষ হয়েছে। আবারও নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আর প্যাকেজ-২ এর কাজ শেষ হয়েছে ৫৫ শতাংশ। বিভিন্ন জটিলতায় প্যাকেজ-৩ এর কাজ এখনও শুরু করা যায়নি। সব মিলিয়ে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৫০ শতাংশের কিছু বেশি।আশুগঞ্জ-বিশ্বরোড পর্যন্ত চারলেন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আওয়াল মোল্লা বলেন, উপদেষ্টার নির্দেশনা মোতাবেক আমরা কাজ করছি। ইতিমধ্যে মহাসড়কে যানজট এখন নেই বললেই চলে। বেহাল অংশের সংস্কার কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজে ফিরতে শুরু করেছে।