ইরানের শহীদ রাজায়ী বন্দরে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২৫ জনে পৌঁছেছে এবং প্রায় ৮০০ জন আহত হয়েছেন, জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা। বিস্ফোরণের প্রায় ২০ ঘণ্টা পরও আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি, তবে বর্তমানে এটি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কাতারভিত্তিক আল–জাজিরা জানিয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে, এবং এখন ৮০ শতাংশ আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে পুরোপুরি নিভে যায়নি। আহতদের মধ্যে ৭৫২ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন, তবে অন্তত ৫ জনের অবস্থা গুরুতর এবং তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী সিরাজ শহরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এ দুর্ঘটনায় অন্তত তিনজন চীনা নাগরিকেরও মৃত্যু হয়েছে, জানিয়েছে চীনা সংবাদমাধ্যম সিজিটিএন। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাসায়নিক পদার্থের রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতি থেকেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) এক সদস্য দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরিত রাসায়নিকটি ছিল সোডিয়াম পারক্লোরেট, যা ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
বিস্ফোরণটি ইরানের বৃহত্তম বাণিজ্যিক বন্দর শহীদ রাজায়ীতে ঘটে। এটি তেহরান থেকে প্রায় ১,০০০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং হরমুজ প্রণালির কাছেই অবস্থিত, যেখানে বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ জ্বালানি তেল পরিবহন হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এর ঝাঁকুনি অনুভূত হয়েছে এবং বিকট শব্দ শোনা যায়।
শহীদ রাজায়ী বন্দর মূলত কনটেইনার পরিবহন করে, তবে এখানে তেল পরিশোধন কেন্দ্র ও পেট্রোকেমিক্যাল স্থাপনাও রয়েছে। সৌভাগ্যবশত, বিস্ফোরণে তেল পরিশোধন কেন্দ্র, জ্বালানি ট্যাংক, বিতরণ কমপ্লেক্স এবং তেল পাইপলাইনের কোনো ক্ষতি হয়নি।
গত সেপ্টেম্বরে কয়লার খনিতে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার ৬ মাসের মধ্যেই রাজায়ী বন্দরে এই বিস্ফোরণ ঘটে। ওই বিস্ফোরণে নিহত হয়েছিল অর্ধশতাধিক কর্মী।