যুক্তরাষ্ট্রে দমন-পীড়নে দুর্বল হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীদের যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ফিলিস্তিনপন্থি প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাস ক্রমশ শান্ত হয়ে আসছে। গতকাল শুক্রবার (৩ মে) ক্যাম্পাসগুলোর পরিবেশ ছিল অনেকটাই নীরব। পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষের পর শৃঙ্খলা ফেরাতে হোয়াইট হাউসের কঠোর নির্দেশনার পাশাপাশি গণগ্রেপ্তারের কারণে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বিরোধী বিক্ষোভ-সমাবেশ এখন অনেকটাই ম্রিয়মাণ। খবর এএফপির

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক নগরীর ম্যানহাটনে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে আজ শনিবার সকালে শিক্ষার্থীদের একটি যুদ্ধবিরোধী শিবির তুলে দেয় পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওগুলোতে দেখা যায় প্রতিবাদকারীরা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে তাদের তাঁবুগুলো গুটিয়ে নিচ্ছে। দেশজুড়ে ক্যাম্পাসগুলোর যে প্রতিবাদী রূপ ছিল এতদিন তার সঙ্গে তুলনা করলে এই দৃশ্যকে শান্তই বলা যায়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বিশ্বের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়েও ছড়িয়ে পড়েছিল এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ।

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো ইউনিভার্সিটিতে স্কুল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রতিবাদীদের আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ ইঙ্গিত দেয় যে শিবির কেন্দ্রিক আন্দোলনে হস্তক্ষেপ করা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাবাহী একদল প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিরোধিতা করে ক্যাম্পাসে অবস্থানের চেষ্টা করলে পুলিশ দুপক্ষকে আলাদা করে দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে গত কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভে এ পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। এ সময় পুলিশের বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত শক্তিপ্রয়োগের অভিযোগও ওঠে।

এসব ঘটনায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার মুখে সম্প্রতি হোয়াইট হাউস থেকে টেলিভিশন বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘আমরা কর্তৃত্ববাদী জাতি নই যে, জনগণের ভিন্নমতকে দাবিয়ে রাখব। তবে আমরা আইনবিহীন কোনো দেশের অধিবাসী নই। আমরা সুশীল সমাজের অংশ এবং নির্দেশ বজায় থাকবে।’

গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ জানাতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে কমপক্ষে ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা গত প্রায় এক মাস ধরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে আসছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের নজিরবিহীন হামলার মাধ্যমে সূত্রপাত হয় গাজা যুদ্ধের। হামাসের হামলায় এক হাজার ৭০ জন ইসরায়েলি নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। পাশাপাশি হামাসের যোদ্ধারা প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে গাজা উপত্যকায় বিরামহীন বোমাবর্ষণ ও সামরিক অভিযান চালায় ইসরায়েল। তাদের হামলায় এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৫০০ জনের বেশি লোক নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নিরীহ শিশু ও নারী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *