বিশ্বকাপেও ভালো ক্রিকেট খেলতে চান যুবারা

খেলাধুলা

বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ বরাবরই শক্তিশালী দল। ২০২০ সালে বিশ্বকাপের পর গেল মাসে এশিয়া কাপ জয়। সব কিছুই এনেছেন টাইগার অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এবার তাদের সামনে দরজায় কড়া নাড়ছে আরেকটি বিশ্বকাপ। স্বাভাবিকভাবেই এশিয়া কাপ জয়ের পর এই টুর্নামেন্টটি নিয়েও দেশ ও সমর্থকদের এই দলের ওপর প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। আর এই বিষয়টা যুব টাইগার দলও জানে। তাই তো গতকাল আসন্ন বিশ্বকাপের দল ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে দলের অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি জানালেন তারা ভালো ক্রিকেট খেলতে চান।

মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনা নিয়ে টাইগার অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক বলেন, ‘পরিকল্পনা আছে ভালো ক্রিকেট খেলার। আসলে ফলাফলটি তো আমাদের হাতে নেই, যা আছে তা হলো ভালো ক্রিকেট খেলা। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে আরো, মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। ম্যাচ বাই ম্যাচ ধরে আগাব কীভাবে প্রতিপক্ষকে হারানো যায় কিংবা কীভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করা যায়, সেগুলো মাথা ঠান্ডা রাখায় ফোকাস দিচ্ছি।’

এ সময় নিজের দল নিয়ে বলেন, ‘গত দুই বছর যাবত্ আমরা একসঙ্গে আছি। এ সময় সবার সঙ্গেই সবার খুব ভালো সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে। আর আমাদের দলের সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে, সবাই সবাইকে খুব ভালো বুঝে খুব ভালো সাপোর্ট করতে পারে। কার কখন কী দরকার, কোনটা ভালো হবে, কী খারাপ হবে সবকিছু একে অন্যের সঙ্গে শেয়ার করে। তো এদিক থেকে আমাদের খুব ভালো বন্ডিং হয়ে গিয়েছে।’

এদিকে সোমবার দল ঘোষণার পর টাইগার যুব দলের প্রধান কোচ স্টুয়ার্ট ল জানান, টুর্নামেন্টের ফলাফলের চেয়ে প্রক্রিয়া ঠিক রাখার দিকেই বেশি মনোযোগী তিনি। বলেন, ‘প্রক্রিয়াটাই সবসময় সবার আগে। আপনি যদি অনেক বড় কিছু যেমন জয় নিয়ে চিন্তা করেন, তাহলে এই পথে কী করতে হবে, তা ভুলে যাবেন। আমি শুধু খেলা বা শেষের ফলের দিকে মনোযোগ দিই না। যা আমাদের হাতে আছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। আর আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে প্রস্তুতি, কীভাবে আমরা এগোব, নিজেদের পরিকল্পনায় অনড় থাকা, ভিন্ন প্রতিপক্ষের জন্য কৌশল সাজানো এবং সব কাজ করে প্রতি ম্যাচে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মাঠে নামা। আমার মনোযোগের কেন্দ্রে এগুলোই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পরের ম্যাচ। আর সেটা ২০ তারিখে, ভারতের বিপক্ষে। তো এই মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ঐ ম্যাচের পর ওখানেই তা শেষ। এরপর আবার পরের ম্যাচটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবার একটি করে ম্যাচ, সেই একই পুরোনো কথা। তবে প্রক্রিয়া অনুসরণে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’

কোচের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রক্রিয়া ঠিক থাকলে বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকে পাওয়া যাবে জাতীয় দলে খেলার মতো সামর্থ্যবান ক্রিকেটার। এরই মধ্যে কিছুটা আভাসও মিলেছে। বিশ্বকাপ দলে থাকা আরিফুল ইসলাম, জিসান আলমরা এরই মধ্যে খেলেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি, আশিকুর রহমান শিবলি, চৌধুরি মোহাম্মদ রিজওয়ানদেরও হয়েছে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে অভিষেক। এসব তরুণের প্রতিভা নিয়ে আশাবাদী প্রধান কোচ। পরবর্তী ধাপে জায়গা পাওয়ার জন্য যেসব জায়গায় মনোযোগ দিতে হবে, তা দেখিয়ে দিলেন ল। ‘বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার সম্ভাবনার ছাপ রাখছে। তারা এখন যে সুযোগ পাচ্ছে, তাতে সবার মনোযোগের কেন্দ্রে থাকছে। এশিয়া কাপ একটি সুযোগ ছিল। তাদের জন্য বিশ্বকাপ আরেকটি মঞ্চ, নিজেদের স্কিল দেখানোর। আমার বিশ্বাস, বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার (জাতীয় দলে) খেলতে পারবে। তবে পুরোটাই তাদের ওপর নির্ভর করবে। তাড়নাটা ভেতর থেকে আসতে হবে। তাদেরই নিশ্চিত করতে হবে, যেন তারা নিজেদের প্রতিভা অপচয় না করে, সুযোগ নষ্ট না করে। একইসঙ্গে মাঠে নেমে নিজেদের খেলাটা উপভোগ করতে হবে। আমি ওদের দেখেছি, যখন ভালো খেলে, মুখে চওড়া হাসি থাকে। মাঠে তারা একে অন্যের পাশে থাকে, একে অন্যের সাফল্য উপভোগ করে। আমরা যদি এভাবে চালিয়ে যেতে পারি, তাহলে ফল দারুণ পাওয়া যাবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *