নতুন বছরের প্রথম দিনে জাপানের মধ্যাঞ্চলে অনুভূত হওয়া বড় ধরনের ভূমিকম্পে কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছে। ভূমিকম্পের ফলে সাগরে সৃষ্টি হয় চার ফুট উচ্চতার সুনামি, ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাড়িঘর, আগুন ধরে যায় কোথাও কোথাও।
গতকাল সোমবারের (১ জানুয়ারি) এই ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। গণমাধ্যমের খবরগুলোতে দেখানো হচ্ছে কাত হয়ে পড়া দালানকোঠা, ডুবে যাওয়া নৌকা আর অসংখ্য পোড়া বাড়িঘর। এ ছাড়া স্থানীয় এলাকাগুলো বরফশীতল রাতের বেলায় বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পটি মূল ভূখণ্ডের হনশু দ্বীপের ইশিকাওয়া এলাকায় আঘাত করে। তবে জাপানের কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৬। আর এটি এর আগের ৯০টি ভূমিকম্পের চেয়ে জোড়ালো ছিল। সোমবার স্থানীয় সময় দিনগত রাত ১টায় এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। খবর এএফপির।
ভূমিকম্পে সোমবার চার ফুট উচ্চতার সুনামি সৃষ্টি হয় ওয়াজিমা এলাকায়। আশপাশের অনেক এলাকাতেও তৈরি হয় ছোট ছোট সুনামি। তবে আরও বড় ধরনের সুনামির আপাতত সম্ভাবনা নেই বলে জানানো হয়েছে। ওপর থেকে তোলা ছবিতে দেখা যায়, সুজুর মাছঘাটে নৌকাগুলো ডুবে গেছে। এ ছাড়া ওয়াজিমা এলাকায় বেশকিছু বড় ধরনের আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এলাকাটির ৩২ হাজার ৭০০ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় সময় কাটাচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ইশিকাওয়ায় বাড়িঘর ও গাড়িগুলো ভীষণভাবে কাঁপছে। দোকানপাট ও ট্রেনে আতঙ্কিত লোকজন ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে পড়েছে। বাড়িঘর ভেঙে পড়ছে আর রাস্তাগুলোতে তৈরি হয়েছে বড় বড় ফাটল।
অগ্নি ও দুর্যোগ ব্যস্থাপনা সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় এক হাজার লোক সামরিক ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে সোমবার দিনের শেষভাগে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক এক বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেন, ‘জরুরি বিভাগের কর্মীদের আমি যেভাবেই হোক দ্রুত উপদ্রুত এলাকায় পৌঁছানোর নির্দেশনা দিয়েছি।’
সাংবাদিকদের কিশিদা বলেন, ‘এখন বেশ শীত পড়েছে। এজন্য আমি জরুরি সহায়তা পণ্য হিসেবে পানি, খাবার, কম্বল, গা গরম রাখার তেল, জ্বালানি, পেট্রোল সরবরাহের নির্দেশনা দিয়েছি।’