দুর্বল' তামিমকে দেখে হতাশ হয়েছিলেন মাশরাফি

দুর্বল’ তামিমকে দেখে হতাশ হয়েছিলেন মাশরাফি

খেলাধুলা

বিসিবি কর্মকর্তাদের এখন ভাবার কথা বিশ্বকাপ নিয়ে। বিশ্বকাপ দল কেমন হবে, প্রস্তুতি কেমন হলে ভালো– এসব নিয়ে প্রশ্ন করার কথা মিডিয়ার। সেখানে প্রশ্নের বিষয় হয়ে গেছেন তামিম ইকবাল। বিসিবি সভাপতি থেকে শুরু করে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও এই জিজ্ঞাসু থেকে বাদ যাচ্ছেন না। নড়াইল এক্সপ্রেস গতকাল একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে সেখানে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে বেশির ভাগ প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় তামিম ইস্যুতে। মানসিকভাবে দুর্বল তামিমকে দেখে হতাশ তিনি। বাঁহাতি এ ওপেনারকে মাশরাফির পরামর্শ– চোটমুক্ত হয়ে খেলায় ফেরার।

তামিমের কোমরের পুরোনো ব্যথা মাঝেমধ্যেই ফিরে আসে। এই ব্যথার জন্য আগে কখনও কোনো আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলা বাদ দেননি তিনি। এবারই প্রথম আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলেননি। ওয়ানডে সিরিজ খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শতভাগ ফিট না হয়ে। কিছুদিন আগে দুটি মিডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, জিমে ভুল ব্যায়াম করানো হয়েছে তাঁকে। ফিজিও ট্রেনারের দিকে ইঙ্গিত করলেও কারও নাম উল্লেখ করেননি তিনি।

সম্প্রতি নিউজ এসেছে তামিমের মেরুদণ্ডের চার ও পাঁচ নম্বর ডিস্কে ক্ষয় ধরেছে। যদিও বিষয়টি তামিম ইকবাল বা কোনো চিকিৎসক নিশ্চিত করেননি। ভুল চিকিৎসা করানোর অভিযোগ এনে বিসিবির মেডিকেল বিভাগকেও কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। বিতর্কিত বিষয়গুলো মাশরাফির কানেও গেছে। তিনি এই আলোচনাকে উস্কে না দিয়ে বরং তামিমকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘যে জিনিসটা হচ্ছে, ওর (তামিম) ইনজুরি ওকে ভোগাচ্ছে। ও পারফর্ম করছে না, কেন করছে না? তার কারণ হচ্ছে, ইনজুরি। তাহলে কী করা উচিত? ওর ইনজুরিটা ঠিক করে আসা উচিত। ওই যে বললাম, সঠিক কাজটা করতে হবে। ওর এখন উচিত ইনজুরি নিয়ে চিন্তা করা। ফিট হয়ে এলে আমি নিশ্চিত, ও রান করবে আর আগের পরিস্থিতিতে ফিরে আসবে।’

৬ জুলাই হঠাৎ অবসরের ঘোষণা দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন তামিম। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের ফোন নম্বরও ব্লক করে রেখেছিলেন। সে পরিস্থিতিতে মাশরাফির মাধ্যমে তামিমকে ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ২৮ ঘণ্টার ব্যবধানে অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারও করে নেন বাঁহাতি ওপেনার। অবসর ঘোষণা থেকে শুরু করে চিকিৎসা সবকিছুতে বিসিবির দিকে আঙুল তুলে যাচ্ছেন তিনি।

মাশরাফি সেদিকে না গিয়ে উল্টো বিস্ময় প্রকাশ করেন তামিমের দুর্বল মানসিকতা দেখে, ‘আমি বেশি আপসেট হয়েছি তামিমকে দুর্বল দেখে। কারণ, ও একজন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়, ওর পক্ষেও তো অনেকে কথা বলছে। বলছে না? আপনি এটুকু লড়াই করতে পারবেন না, এটা আমার মনে হয়নি। কখনও কখনও মানুষ ভেঙে পড়ে। তখন মনে হয় কাউকে সাপোর্ট দরকার। আমি এ ক্ষেত্রে বলব, তামিম খুব ভাগ্যবান যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে ডেকেছেন, কথা বলেছেন এবং তাকে ক্রিকেটে ফিরিয়ে এনেছেন। এই সৌভাগ্য সবার হয় না। আমি মনে করি, এটা শুধু পারিপার্শ্বিক চাপের বিষয় না, মানসিকভাবেও শক্ত থাকা উচিত তার। তামিমের শতভাগ ফিট হয়ে আসা উচিত। একই সঙ্গে ওরকম মানসিক প্রস্তুতি থাকা উচিত, ও পারফরমার ছিল, পারফরম্যান্সই তার হয়ে কথা বলবে। এর বাইরে কোচ তার পক্ষে আছেন, ক্রিকেট বোর্ড পক্ষে আছে নাকি আমরা পক্ষে আছি– আমরা আশা করব না যে, ওর মতো ক্রিকেটার এগুলো নিয়ে চিন্তা করবে।’

কোমরের উন্নত চিকিৎসা নিতে তামিম এখন লন্ডনে। আজ মেরুদণ্ড বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার কথা রয়েছে। বিসিবির প্রধান ফিজিশিয়ান ডা. দেবাশীষ চৌধুরীও রয়েছেন সেখানে। আশা করা হচ্ছে, আজকালের মধ্যে তামিমের শারীরিক কন্ডিশন সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা দিতে পারবে বিসিবি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *