প্যারিস সেন্ট জার্মেইর (পিএসজি) সঙ্গে আগামী মাসে দুই বছরের চুক্তি শেষ হচ্ছে। এরপর ফ্রি এজেন্টে হয়ে পাড়ি দেবেন নতুন কোনো ঠিকানায়। কারণ ফ্রান্সের ক্লাবটির সঙ্গে লিওনেল মেসির যে চুক্তি নবায়ন হচ্ছে না সেটা নিশ্চিতই বলা যায়।
গত মার্চে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে শেষ ষোলোর ম্যাচে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে দুই লেগে হেরে বিদায় নেয় পিএসজি। ওই হারের পর মেসির ওপর থেকে মন উঠে যায় ক্লাবটির সমর্থকদের। সেই তিক্ততায় যোগ হয় তার সৌদি আরব ভ্রমণ। কোচের অনুমতি ছাড়া মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণে মেসির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। পিএসজি ফরওয়ার্ডের দুঃখ প্রকাশে পরে শাস্তি উঠিয়ে নেয় ক্লাবটি। শাস্তি ওঠানোয় অসন্তোষ প্রকাশ করে দেশটির কট্টর সমর্থক গোষ্ঠী। সবশেষ খবর অনুযায়ী সমর্থকরা পিএসজির ম্যাচ বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। এমতাবস্থায় মেসির পিএসজি অধ্যায় যে শেষ হচ্ছে সেটা বলাই যায়।
নতুন মৌসুমে মেসি কোথায় ঠিকানা খুঁজে নেবেন তা এখনো নিশ্চিত নয়। যদিও কদিন আগে এএফপি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যে মেসির সঙ্গে সৌদি আরবের চুক্তি হয়ে গেছে। তবে তা অস্বীকার করেছেন মেসির বাবা ও এজেন্ট হোর্হে মেসি। তিনি দাবি করেছেন, এমন সংবাদের কোনো সত্যতা নেই। মেসি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। আর্জেন্টিনা অধিনায়কের সঙ্গে চুক্তি করার জন্য বর্তমানে দুটি পক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। একটি পক্ষ সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল, অন্যটি মেসির সাবেক ক্লাব বার্সেলোনা। সৌদি আরব এখনো বিশ্বাস করে যে পিএসজির সঙ্গে চুক্তি শেষে আল হিলালকে সবুজসংকেত দেবেন মেসি। বিশ্বকাপজয়ী তারকাকে পেতে ক্লাবটি ৪০০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করতেও রাজি আছে। এমন তথ্যই অনেকবার উঠে এসেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। যদিও মেসির পক্ষ থেকে সেসবকে গুজব বলেই প্রতিবার উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গুজব হলেও এটা অনেকেই মানছেন সৌদির যেকোনো ক্লাবই এমন টাকা খরচ করতে পারে। এর আগে আল নাসের যেটা করেছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে সই করিয়ে।
ফুটবলে বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকে পর্তুগিজ যুবরাজকে তারা দলে ভিড়িয়েছে। তাই আর্জেন্টাইন তারকার বেলায় সেটা ছাড়িয়ে যাবে এমনটা ভাবা অবান্তর নয়। হয়তো মেসি নিজেও এটা জানেন আল হিলালের সঙ্গে আর্থিক শর্তে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো কঠিন হবে না। তবে সাতবারের ব্যালন ডি অর বিজয়ী আদতে মধ্যপ্রাচ্যে যেতে ইচ্ছুক কি না সেটাই দেখার বিষয়।
মেসিকে দলে ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে বার্সেলোনা। এ ক্লাবটির হয়ে তিনি অসংখ্য শিরোপা জিতেছেন। অনেকের ধারণা, ক্যাম্প ন্যুতে ফিরে আসতে পেরে আনন্দিত হবেন মেসি। কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে ক্লাবের আর্থিক সমস্যা। এমনিতেই শনিরদশা কাটিয়ে উঠতে পারছে না কাতালান ক্লাবটি। তার ওপর নতুন করে যুক্ত হয়েছে জরিমানা। অনিয়মের দায়ে বার্সেলোনাকে বৃহস্পতিবার প্রায় ১৮৪ কোটি টাকা জরিমানা করেছে দেশটির কর কর্তৃপক্ষ। তবু বার্সেলোনা সমাধান পাওয়ার আশায়। নতুন মৌসুমে তারা খেলোয়াড় বিক্রি বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা উপার্জন করবে। এ ছাড়া কিছু ফুটবলারকে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও করে রেখেছে কাতালান ক্লাবটি। তাদের এসব পরিকল্পনা যদি ঠিকঠাক বাস্তবায়িত হয়, আর মেসিও যদি ক্লাবের প্রতি উদারতা দেখান তবে দুইয়ে দুইয়ে চার মিলে যেতে শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র।