হ্যাপি ফিফটি, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

হ্যাপি ফিফটি, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

বিনোদন

তার সম্পর্কে কিছু বলা বা লেখার আদৌ কী কোনো প্রয়োজন আছে? তিনি তার নাম দ্বারাই প্রতিষ্ঠিত। এর মধ্যেই নিজেকে প্রতিষ্ঠানতুল্য করে ফেলেছেন। মাত্র ৫০ বছর বয়সেই সর্বজনবিদিত তিনি। যার কথা বলছি আজ তার জন্মদিন এবং তিনি আর কেউ নন, ওয়ান অ্যান্ড ওনলি মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

আজ সময়ের আলোচিত নন, সম সময়ই আলোচনায় থাকা এই গুণী মানুষের ৫০তম জন্মদিন। সমাজমাধ্যমে সব সময়ই সরব মানুষটি। আর জন্মদিন উপলক্ষে, আর তা-ও আবার যদি যদি হয় হাফ-সেঞ্চুরির মামলা, তাহলে কথা তো কিছু বলবেনই তিনি। বললেনও। নিজের ফেভিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক লম্বাচওড়া স্ট্যাটাস ঠুকে দিলেন। বললেন মনের কথা। সেই সঙ্গে স্ত্রী, সন্তান, পরিজন নিয়ে তোলা কয়েকটি ছবিও পোস্ট করলেন তিনি। যাতে দেখা যাচ্ছে- কেক কেটে জন্মদিন পালনের কিছু ছবি।প্রতিভাবান এই গুণী মানুষটিকে দেশ রূপান্তরের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। দীর্ঘ ও কীর্তিময় হোক আপনার জীবন।

জন্মদিন উপলক্ষে ফেসবুকে দেওয়া তার পোস্টটি পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো…

সারাজীবন আমি বয়স গুনি নাই, গুনছি ব্লেসিংস! আজকে আমার ৫০তম জন্মদিনে এসে তাই পেছন ফিরে নিজেকে একজন কৃতজ্ঞ মানুষই মনে হচ্ছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ পৃথিবী নামের এই গ্রহে এক চমৎকার জার্নির জন্য আমাকে নির্বাচিত করার জন্য। আমার জার্নিটা অন্য আরো কোটি রকম হতে পারতো! হতে পারতাম কীর্তনখোলা নদীর পারের এক উদাসী রাখাল। কিংবা যাত্রা প্যান্ডেলের টিকিট চেকার। অথবা কোনো এক নির্জন স্কটিশ গ্রামের পাইপার। এর কোনোটাই ভালো বা খারাপ বলছি না। বলছি এই যে বাংলাদেশের একজন গল্পকথক হইছি, হয়ে আমার সময়টাকে গল্পে ধরার চেষ্টা করছি, করতে গিয়ে কতো মানুষের ভালোবাসা পাইছি, কতো মানুষের সাথে কতো ব্রীজ তৈরি করছি, এইসবই একেকটা ব্লেসিংস। তিশার মতো একজন সঙ্গী পাইছি এই জার্নিতে, ইলহামের মতো একটা বেহেশতের টুকরা পাইছি। আমি তার কোনো নিয়ামতকে অস্বীকার করবো?

আজকে পিছনে ফিরে ভাবি, আমি যখন ছবি বানাতে শুরু করি, তখন যেসব রাস্তায় আমি হাঁটা ধরছিলাম, আমি তো পথ হারায়ে ঝরে যেতে পারতাম আরো এক স্বপ্নবান তরুণ হিসেবে। কতো ঝড় গেছিলো, ভাষার ঝড়, অভিনয়ের ঝড়, এমনকি বিষয়ের ঝড়ও। আজকের সময়ে বসে হয়তো বোঝা যাবেনা একসময় ন্যাচারাল অভিনয় করাতে চাওয়াটা কতো ‘আনন্যাচারাল’ ছিলো, স্বাভাবিক সংলাপ লেখাটাও কত বড় অপরাধ ছিলো! আজকের বাংলাদেশি ভিজুয়াল ল্যান্ডস্কেপের দিকে তাকালে সেই সব দিন অবিশ্বাস্যই মনে হয়।

হয়তো করা যেতো আরো অনেক কিছুই, আরো অনেক বেটার কিছু, কিন্তু আজকের এই দিনে এসে অপ্রাপ্তির দিকে তাকাইতে চাই না। কারণ যখনই গুনতে বসবেন, জীবনে প্রাপ্তির চেয়ে অপ্রাপ্তি বেশিই হবে। গুনতে চাই তাই ব্লেসিংস! জীবনের দুই-তৃতীয়াংশ পার করে দিয়েছি! ট্রেন যতোদূর যাবে, চাইবো সেটা যেনো মিনিংফুল জার্নি হয় আরো।

নতুন নতুন গল্পে দেখতে চাইবো সময়টাকে! আর হ্যাঁ, এমনও হইতে পারে, ছবি বানানোর পাশাপাশি দেখতে পারেন নতুন কোনো ভূমিকায়ও। কারণ জীবন শুরু হতে পারে ফিফটিতেও।

সবাই ভালো থাকবেন। ভালোবাসবেন সবাইকে। গভীরে নামলে দেখবেন, মানুষে মানুষে ঘৃণার আসলে কোনো গভীর কারণই নাই। আমাদের এইসব পার্থক্য সব ওপরের, সকলই কসমেটিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *