বিএনপির সঙ্গে আলোচনা’ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কাদের সঙ্গে আলোচনা করব আমি? একে সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তারপর আবার আমার বাবা-মা, ভাই-বোনদের খুনি, যুদ্ধাপরাধী। তারপরও দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য অনেক উদারতা দেখিয়েছি। তবে এখন আর তাদের (বিএনপি) সাথে কথা বলার মতো কিছু নেই। কারণ তাদের যে অপরাধ, আমার ২১ হাজার নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কিন্তু বারবার বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করেছি, ২০১৮ এর নির্বাচনেও। আসলে বিএনপি এমন একটা রাজনৈতিক দল, এই দলটা সৃষ্টি করেছে একজন মিলিটারি ডিক্টেটর, যে ১৯৭৫ সালে আমার বাবা-মা-ভাই-বোনদের হত্যা করে একজন রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। ক্ষমতায় আসার আগে আমার বাবাকে হত্যা করা হলো, তারপর যিনি ক্ষমতায়- তাকে সরাল, তারপরে আরেকজন চিফ জাস্টিস সায়েম-তাকে সরিয়ে অস্ত্র হাতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসে। তারপর সে একটা রাজনৈতিক দল করে। একজন সেনাপ্রধান নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে চেয়ারে বসল, তারপর হ্যাঁ/না ভোটের নামে নাটক করা হলো। সেখানে না ভোট না, হ্যাঁ ভোটই হয়ে গেল।…এ কথা সবাইকে মনে রাখতে হবে যে, অস্ত্র হাতে নিয়ে ক্ষমতা দখল করে, ক্ষমতায় বসে থেকে যে রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করেছে, সেটাই হচ্ছে বিএনপি।’
‘র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে আপনারা কী কী সংস্কার করেছেন এবং আগামীতে কী কী সংস্কার করবেন?’ এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকার পরামর্শেই, কিন্তু র্যাবের সৃষ্টি। এ বাহিনীর প্রশিক্ষণ থেকে সবকিছুই আমেরিকার করা। যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলো এবং একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আমরা অব্যাহত রাখলাম, হঠাৎ করে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি আমার কাছে বোধগম্য নয়। বরং এর আগে তাদের যে ভূমিকাগুলো ছিল সেগুলো প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। র্যাবের কোনো সদস্য অপরাধ করলে তার বিচার হয়। র্যাবের কেউ অপরাধে জড়িয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসি। যেটা অন্য কোনো দেশে নেই, এমনকি আমেরিকাতেও নেই। এই আইনের শাসনটা আমাদের দেশে বলবৎ আছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এমন দৃষ্টান্ত আছে কোনো এক প্রতিমন্ত্রীর মেয়ের জামাই র্যাবের সদস্য থাকা অবস্থায় একটি অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিল। তাকেও সঙ্গে সঙ্গেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, জেলে দেওয়া হয়েছে, সে শাস্তিও পেয়েছে। বিষয়টিকে আমরা এভাবেই দেখছি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে র্যাবের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু, হঠাৎ করে র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে জঙ্গিরা আবার উৎসাহিত হয়ে পড়ল। এটা হলো বাস্তবতা।’