১৩৩ বছরের রেকর্ড ভাঙলেন মিরাজ

১৩৩ বছরের রেকর্ড ভাঙলেন মিরাজ

খেলাধুলা
পোর্ট এলিজাবেথে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকাকে দিনের প্রথম ওভারে চ্যালেঞ্জ জানান পেসার খালেদ আহমেদ। পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে বল তুলে নেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। তাতেই এক বিরল রেকর্ডে নাম লেখান মিরাজ। সেন্ট জর্জেস পার্ক স্টেডিয়ামে প্রায় ১৩৩ বছর পর অন্যপ্রাপ্তে ইনিংস শুরু করলেন কোনো স্পিনার।

সবশেষ ১৮৮৯ সালে পোর্ট এলিজাবেথে (যার বর্তমান নাম গেবেখা) দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের প্রথম টেস্টে স্বাগতিকদের পক্ষে একপ্রান্ত থেকে নতুন বলে আক্রমণ শুরু করেন ইংল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার জনি ব্রিগস। সেবার প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেট  নেন ব্রিগস। আর ম্যাচে ৮ উইকেটে জেতে ইংল্যান্ড।

এছাড়া গত ৮৬ বছরে এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে স্পিনার দিয়ে আক্রমণ শুরুর ঘটনা ঘটলো। সবশেষ ১৯৩৫’র ডিসেম্বরে জোহানেসবার্গে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বোলিং আক্রমণ শুরু করেন অস্ট্রেলিয়ার লেগস্পিনার বিল ও’রাইলি। দক্ষিণ আফ্রিকায় স্পিন দিয়ে আক্রমণ শুরু করার নজির খুব বেশি নেই।

১৮৮৯ সালে পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের পর সে বছরেরই মার্চে কেপ টাউন টেস্টে দ্বিতীয়বার কোনো স্পিনার নতুন বল হাতে নেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আক্রমণ শুরু করেন প্রোটিয়া স্পিনার আলবার্ট রোজ-ইনেস। ঘটনার পুনরাবৃত্তি ১৮৯৬ সালে ইংল্যান্ডের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে জোহানেসবার্গে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে বোলিংয়ের শুরু করেন আরেক প্রোটিয়া স্পিনার জর্জ রোয়ে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকায় আরও দু’বার নতুন বলে বল করেছেন রোয়ে। কেপ টাউনে সিরিজের তৃতীয় টেস্টেও বাঁহাতি স্পিনার টেড টেলরকে দিয়ে বোলিংয়ে এক প্রান্ত থেকে ওপেন করায় ইংল্যান্ড।

ওই ঘটনার ১০ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে টেস্টে আরেকজন স্পিনারকে বোলিংয়ে ওপেন করতে দেখা যায়। ১৯০৬ সালে জোহানেসবার্গে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অন্য প্রান্ত থেকে শুরু করেন প্রোটিয়া লেগ স্পিনার অব্রে ফকনার। দ্বিতীয় টেস্টে একই ভূমিকায় ছিলেন ইংলিশ স্পিনার কলিন ব্লাইথ। ব্লাইথের ২৯ বছর পর ১৯৩৫ সালে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অন্য প্রান্তে বোলিং করেন অজি স্পিনার ও’রাইলি। তার পরে এলেন মিরাজ।

ডারবান টেস্টে এক স্পিনার নিয়ে খেলেছিল বাংলাদেশ। একাদশে ছিলেন মিরাজ। আরেকজন স্পিনারের অভাব হারে হারে টের পেয়েছিল মুমিনুলরা। দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার কেশব মহারাজ একাই ৭ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে দেন ৫৩ রানে। বিষয়টি মাথায় রেখেই কিনা পোর্ট এলিজাবেথে মিরাজের সঙ্গে স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসেবে তাইজুল ইসলামকে নিয়েছে বাংলাদেশ।

যদিও এ ভেন্যুতে সবসময় পেসাররাই দাপট দেখিয়ে এসেছেন। তবে স্পিনাররাও ভালো বোলিং করলে সাফল্য পান। কেশব মহারাজ এখানে ৫ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়েছেন। ৫ উইকেট রয়েছে দুইবার। এছাড়া বর্তমানে খেলছেন এমন স্পিনারদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার নাথান লায়ন ২ ম্যাচে নিয়েছেন ৯ উইকেট। দুই বছর আগে ইংল্যান্ডের অফস্পিনার ডমিনিক বেস এখানে ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছিলেন। এসব পরিসংখ্যানে আশাবাদী  হতে পারেন মিরাজ-তাইজুলরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *