মওদুদ আহমদের জানাজায় নেতাকর্মীদের ঢল

মওদুদ আহমদের জানাজায় নেতাকর্মীদের ঢল

বাংলাদেশ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের জানাজায় দলের নেতাকর্মীদের ঢল। গতকাল শুক্রবার (১৯ মার্চ) সকাল ১১টায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রবীণ এই আইনজীবীর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজা উপলক্ষে বিএনপির নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বেলা ১১টায় জানাজা শেষ হয়। জানাজা শেষে প্রিয় নেতার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

জানাজা শেষে প্রিয় নেতার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। নয়া পল্টনের জানাজায় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল সহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। নয়াপল্টনে দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে লাশ নেওয়া হবে মওদুদ আহমদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানিকপুরে।

নোয়াখালীর কবিরহাট ডিগ্রি কলেজ মাঠে বেলা আড়াইটায় তৃতীয় জানাজা এবং বিকাল ৪ টায় বসুরহাট কোম্পানীগঞ্জ সরকারি মুজিব মহাবিদ্যালয় মাঠে চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এর পর বিকেল সাড়ে ৫টায় মানিকপুর কোম্পানিগঞ্জ নিজ বাসভবনের সামনে সর্বশেষ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশেই শায়িত হবেন প্রবীণ এই রাজনীতিক।

এর আগে শুক্রবার সকাল ৯ টার দিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জন্য মওদুদ আহমদের কফিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হয়। এ সময় বিএনপি, নাগরিক ঐক্য, জাগপা, এনডিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ মওদুদ আহমেদ লাশে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মওদুদ আহমেদ মরদেহ ফুলের শ্রদ্ধা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জাগপার একাংশের সভাপতি লুৎফর রহমান, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মস্তফা জামাল হায়দার প্রমুখ।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মওদুদ আহমেদ মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ হলে বেলা ৯ টা ৫০ মিনিটে জানাজার জন্য সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যারিস্টার মওদুদের জানাজায় জামায়াত নেতাদের অংশগ্রহণ:
সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি, বিশিষ্ট আইনজীবী, আইনপ্রণেতা ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের জানাজায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত জানাজায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারে নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মী অংশ নেন।
পরে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার।
জানাজায় জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ও অ্যাডভোকেট মুয়ায্যম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মুঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, ঢাকা বারের সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট এসএম কামাল উদ্দিন প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি
মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত মওদুদ আহমদ:
মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত হলেন বরেণ্য রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ৬ষ্ঠ জানাজা শেষে কোম্পানীগঞ্জের মানিকপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
দুপুর থেকে মওদুদ আহমদের জানাজায় অংশ নিতে কবিরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজ ও বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতে থাকে। বিকাল তিনটায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠ। সেখানে তার তৃতীয় নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়। এরপরে অ্যাম্বুলেন্সে করে মওদুদ আহমদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে। সেখানে জানাজা শেষে নিজ বাড়ির দরজায় ৬ষ্ঠ জানাজা শেষে সমাহিত করা হয়।

এর আগে সিঙ্গাপুরে একটি জানাজা ও ঢাকায় দুটি জানাজা শেষে শুক্রবার দুপুর ৩টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে কবিরহাট ডিগ্রি কলেজ মাঠে আনা হয় মওদুদ আহমদের মরদেহ।
জানাজায় অংশ নেন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য তাবিথ আউয়াল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান, কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক লিটন চৌধুরী, কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জুসহ দলীয় নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণ।

অপরদিকে সরকারী মুজিব কলেজ মাঠে জানাজায় অংশ নেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, সাবেক বিরোধী দলীয় চিপ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রিপন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাই সেলিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম সিকদার, বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আবদুল মতিন লিটনসহ দলীয় নেতাকর্মীও সর্বস্তরের জনগণ।

এ সময় মরহুমের জন্য দোয়া চেয়েছেন মরহুমের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসনা জসিম উদ্দিন মওদুদ।

মওদুদ আহমদের ব্যক্তিগত সহকারী মমিনুর রহমান সুজন বলেন, ‘ঢাকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে হেলিকপ্টারযোগে মরদেহ কবিরহাট উপজেলায় নিয়ে আসা হয়। বাদ জুম্মা কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠ, বিকেল সাড়ে ৪ টায় বসুরহাট সরকারি কলেজ মাঠ, ৬ টা ১০ মিনিটে মানিকপুরের নিজ বাড়ির দরজায় জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তার মরদেহ বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছায়। বিমানবন্দর থেকে মরদেহ ঢাকার একটি হাসপাতালের হিমঘরে নেয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *