টিকার দ্বিতীয় ডোজ ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের ব্যবধানে দেয়ার পরামর্শ

টিকার দ্বিতীয় ডোজ ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের ব্যবধানে দেয়ার পরামর্শ

বাংলাদেশ

দেশে করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে টিকার প্রথম ডোজ নেয়া ব্যক্তিদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রস্তাবনা অনুযায়ী ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজ দিতে সরকারকে বিশেষভাবে পরামর্শ দিয়েছে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে অনুষ্ঠিত কমিটির ২৬তম অনলাইন সভায় এ পরামর্শ দেয়া হয় বলে সোমবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।অধ্যাপক মোঃ সহিদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সব সদস্যের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সভায় বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভায় উল্লেখ করা হয় যে, বাংলাদেশ সরকার সফলতার সাথে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে। প্রাথমিক ভয়-ভীতি, গুজব উপেক্ষা করে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী টিকা নেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ হয়েছে। সুশৃঙ্খলভাবে টিকা কর্মসূচি চলছে।টিকাদানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি সন্তোষ প্রকাশ করে এবং এ জন্য সরকারকে অভিনন্দন জানানো হয়।

প্রাথমিকভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই বিনামূল্যে টিকা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কমিটি মতামত প্রকাশ করে।কমিটি ‘কোভিশিল্ড’ টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রদানের সময় নিয়ে আলোচনা করে এবং মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রস্তাবনা অনুযায়ী ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার সিদ্ধান্ত বৈজ্ঞানিকভাবে যৌক্তিক। এই প্রস্তাবনা অনুসরণ করার জন্য সরকারকে বিশেষভাবে পরামর্শ দেয়া হয়।

সভা থেকে টিকার মেয়াদকালের দিকে লক্ষ্য রেখে দ্রুত কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।এছাড়া, বৈঠকে টিকা প্রদান শুরু হওয়ার পরও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পূর্বের মতো প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোভিড-১৯ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণের জন্য সোমবার পর্যন্ত ২০ লাখ ২২ হাজার ২০১ জন নিবন্ধন করেছেন। দেশের এক হাজার ৪০০ টিকাদান কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৩ লাখ ৬০ হাজার টিকাদানের সক্ষমতা রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সারা দেশে করোনার টিকা নিয়েছেন ১১ লাখ ৩২ হাজার ৭১১ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ সাত লাখ ৭৩ হাজার ৬২৪ জন এবং নারী তিন লাখ ৯০ হাজার ৮৭ জন।

গত ২৭ জানুয়ারি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পরীক্ষামূলক টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে পাঁচজনকে টিকা দেয়া হয়। আর সংক্রমণ রোধে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে ব্যাপকভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

করোনার টিকা নিতে চাইলে www.surokkha.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।

ভারতের উপহার হিসেবে সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকার ২০ লাখ ডোজ গত ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে পৌঁছে। এরপর ২৫ জানুয়ারি সেরাম থেকে বাংলাদেশের ক্রয় করা কোভিশিল্ডের প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ নিরাপদে ঢাকায় আসে। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি টিকার দ্বিতীয় চালান দেশে আসবে। এ চালানে ২০ থেকে ৩০ লাখ ডোজ টিকা আনা হবে বলে বলে সোমবার জানিয়েছেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন।

সূত্র : ইউএনবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *