জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে আহত শতাধিক

জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে আহত শতাধিক

আন্তর্জাতিক

জাপানে শক্তিশালী একটি ভূমিকম্পে শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। এতে দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলের বিস্তৃত এলাকায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।শনিবার মধ্যরাতের কিছুক্ষণ আগে দেশটির উত্তরপূর্ব উপকূলে ৭ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পটি হয়, যাকে ২০১১ সালে একই এলাকায় হওয়া ধ্বংসাত্মক আরেকটি ভূমিকম্পের পরাঘাত বলে মনে করা হচ্ছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রযটার্স।

এর কেন্দ্র ফুকুশিমা প্রিফেকচারের উপকূলে ভূত্বকের ৬০ কিলোমিটার গভীরে বলে জানিয়েছে জাপানের আবহওয়া সংস্থা।স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৮ মিনিটে উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্পটিতে উপকেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকাগুলোর দেয়ালে ফাটল ধরেছে, বহু জানালা ভেঙে পড়েছে এবং ফুকুশিমায় একটি ভূমিধস হয়েছে।

১০ বছর আগের ওই ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ব্যাপক সুনামিতে জাপানের উত্তরপূর্বাঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল এবং ২৫ বছরের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বিপর্যয়কর পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল।আরও কয়েকদিন ধরে বেশ কয়েকটি পরাঘাত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া সংস্থাটি।

ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে কয়েকশত কিলোমিটার দূরে রাজধানী টোকিওর ভবনগুলোও কেঁপে উঠেছিল।ভূমিকম্পের পরপরই উত্তরপূর্বাঞ্চলের লাখ লাখ ভবন বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে, তবে রোববার সকালের মধ্যে অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরে আসে।

বেশ কয়েক হাজার বাড়ি পানিশূন্য হয়ে পড়ে, বিভিন্ন এলাকায় পানিবাহী ট্যাংক লরি পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, পানি সংগ্রহের জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা প্লাস্টিকের জগ নিয়ে লাইন ধরেন।

রোববার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিসভার মুখ্য সচিব কাতসুনোবু কাতো জানান, শুক্রবার ওই অঞ্চলে পৌঁছানো ফাইজারের করোনাভাইরাস টিকাগুলোতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কোনো প্রভাব পড়েনি। চলতি সপ্তাহেই সেখানে টিকাদান কর্মসূচী শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, অন্তত ১০৪ জন আহত হয়েছেন, এদের অনেকের শরীরের হাড় ভাঙলেও কারও মৃত্যুর কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

ভূমিকম্পের পর কোনো সুনামি হয়নি। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রমেও কোনো বিঘ্ন ঘটেনি।ফুকুশিমা দাই-নি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পারমাণবিক চুল্লির নিঃশেষিত জ্বালানির একটি পুকুর থেকে ১৬০ মিলিলিটার পানি উপচে পড়লেও এতে বিপদের আশঙ্কা নেই বলে এনএইচকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ভূমিকম্পে রেল লাইনের ক্ষতি হওয়ায় জাপানের উত্তরাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকায় শিনকানসেন বুলেট ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অন্তত একটি লাইনে ট্রেন চলাচল মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।এই ভূমিকম্প ২০১১ সালের দানবীয় ভূমিকম্পের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।

ওই ভূমিকম্প ও পরবর্তী সুনামিতে জাপানের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের বিস্তৃত এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল এবং প্রায় ২০ হাজার লোক নিহত হয়েছিল।বিশ্বের সবচেয়ে কম্পনপ্রবণ এলাকায় অবস্থিত জাপানে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। বিশ্বের ৬ বা ততোধিক মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় ২০ শতাংশ জাপানে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *