আগামী রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে জার্মানি চেক প্রজাতন্ত্রের সীমান্ত এলাকা ও অস্ট্রিয়ার টিরোল প্রদেশ থেকে সীমান্ত বন্ধ করছে। করোনাভাইরাস ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ায় চেক প্রজাতন্ত্রের আরও তিনটি জেলার ক্ষেত্রে একই রকম নিয়ন্ত্রণ চালু করছে। লকডাউনের মেয়াদ ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত।
জার্মানির স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ‘গত বছর করোনা সংকটের সূচনার সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশ মুক্ত সীমান্ত বন্ধ করে সমালোচনার মুখে পড়েছিল। তাই করোনা নিয়ন্ত্রণে কিছু দেশের সীমান্ত বন্ধ করা হচ্ছে। চেক প্রজাতন্ত্রে করোনার ব্রিটিশ সংস্করণ ও টিরোল প্রদেশে দক্ষিণ আফ্রিকার করোনার নতুন ধরণ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে’।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল এক ভাষণে দেশবাসীর উদ্দেশে আরো কিছুদিন ধৈর্য ধরার আবেদন জানিয়েছেন। লকডাউনের মেয়াদ ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পক্ষে কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজন ছাড়া বাড়তি এক দিনও লকডাউন কার্যকর করা হবে না। সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ প্রতিরোধ করতে আপাতত এ ছাড়া কোনো উপায় নেই।
অন্য কিছু দেশের তুলনায় জার্মানিতে টিকাদান কর্মসূচির ধীরগতির কারণে মানুষের মনে যে হতাশা সৃষ্টি হচ্ছে, সে বিষয়ে তিনি যথেষ্ট সচেতন। তবে এ ক্ষেত্রেও ধৈর্যের আবেদন করেন তিনি’।
স্যাক্সনি ও বাভেরিয়া রাজ্য জার্মানির ফেডারেল সরকারের উদ্দেশ্যে এই দুই অঞ্চলকে ‘ভাইরাস মিউটেশন এরিয়া’ হিসেবে চিহ্নিত করে সীমান্তে কড়া নিয়ন্ত্রণের ডাক দিয়েছিল। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই দুই সীমান্তে চেকপয়েন্টসহ অন্যান্য কিছু ব্যবস্থা করছে। তবে মানুষ চলাচল বন্ধ রাখলেও বাণিজ্যিক সম্পর্কের স্বার্থে পণ্যবাহী ট্রাক বা ট্রেনের যাতায়াত বন্ধ করা হবে না।
জানুয়ারি মাসের শেষ থেকেই জার্মানি কিছু দেশকে ‘ভাইরাস মিউটেশন এরিয়া’ হিসেবে চিহ্নিত করে সেখান থেকে মানুষের আগমন কার্যত বন্ধ রেখেছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপে করোনা সংকটের মোকাবেলার প্রচেষ্টা প্রশ্নের মুখে পড়ছে। প্রায় দুই মাস ধরে কড়া লকডাউন কার্যকর করে জার্মানির মতো দেশ দৈনিক সংক্রমণের হার অনেকটা কমাতে পারলেও সেই সাফল্য কতকাল ধরে রাখা সম্ভব, সে বিষয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বৃহস্পতিবার ইউরোপে লকডাউন শিথিল করার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে।
ডাব্লিউএইচও-র ইউরোপের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হান্স ক্লুগে বলেন, সংক্রমণের হার সার্বিকভাবে কমে গেলেও কিছু এলাকায় করোনাভাইরাসের নতুন ও আরো ছোঁয়াচে সংস্করণগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তাঁর মতে, ইউরোপের প্রায় সব দেশই এই মুহূর্তে বিপদের মুখে রয়েছে। টিকার আশায় অপেক্ষা ও ভ্রান্ত নিরাপত্তাবোধ পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটাতে পারে বলে হান্স ক্লুগে মনে করছেন।