বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার পর ডিস্ট্রিক অব কলাম্বিয়ার (ডিসি) মেয়র মুরিল বসের এই কারফিউ জারি করেন।যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় এই কারফিউ শুরু হয়েছে, চলবে সকাল ৬টা পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টায় শুরু হয়েছে, চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত)।
এদিকে, কারফিউ চলাকালেই হাউস অব কংগ্রেসের
স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ট্রাম্পের সমর্থকদের তাণ্ডবের কারণে স্থগিত হয়ে যাওয়া অধিবেশন আবারও শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন। ঘোষণা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের সময় রাত ৮টায় (বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায়) অধিবেশন আবারও শুরু হওয়ার কথা।
সিএনএন জানিয়েছে, কারফিউয়ের ঘোষণা শুনে ক্যাপিটল হিলের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ট্রাম্প সমর্থকদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বাড়ি ফিরে গেলেও এখনও সেখানে ভোট গণনার দাবিতে বিপুল সংখ্যক সমর্থক রয়ে গেছেন।
তারা সেখানে থেকে আবারও ভোট গণনার দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। তবে পুলিশ চরমপন্থা অবলম্বন না করে শান্ত রয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে বাড়ি ফেরাতে চাইছে।
এর আগে তাণ্ডবের ঘটনার পর টুইটারে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় সমর্থকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসময় সমর্থকদের শান্ত থেকে বাড়ি লোর আহ্বান জানান তিনি।
তবে পরে টুইটার থেকে তার বার্তাটি মুছে দেওয়া হয়েছে। দাঙ্গা ছড়ানোর আশঙ্কা থাকায় পরে তার টুইটার অ্যাকাউন্টও ব্লক করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, ওই তাণ্ডবের পর সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে জয়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের এমন আচরণে বিস্ময় ও বিরক্তি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিস্মিত, স্তম্ভিত। নির্বাচনে জয় পরাজয় থাকবেই। দাবি বা ভিন্নমতও থাকতে পারে।
তাই বলে এমন ঘটনা ঘটে কী করে ? তিনি বলেন, এটা ভিন্ন মত প্রকাশ নয়, এটা আইন হাতে তুলে নেওয়া। এটা বিশৃঙ্খলা। এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার পর্যায়ে পড়ে এবং এখনই এটা শেষ হতে হবে। আমি আন্দোলনকারীদের ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানচ্ছি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কাজকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানাই।
ট্রাম্পের সমর্থকদের এমন আচরণকে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ইতিহাসে অভূতপূর্ব লাঞ্ছনা উল্লেখ করে তিনি দাঙ্গাবাজদের উদ্দেশে বলেন, ‘মনে রাখা উচিত এটা
আমেরিকা। এখানে এ ধরনের আচরণকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না।’ এসময় তিনি সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
তবে এই কারফিউয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়া নিয়ে দোদুল্যমান বিক্ষোভকারীদের আবারও একত্রিত করেছে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির ঘোষণা। যদিও ক্যাপিটল হিল খালি করার শর্ত আছে তার বৈঠকে বসার ঘোষণায় তবে টেলিভিশন বিশ্লেষকদের বলতে শোনা গেছে, বিক্ষোভকারীদের ক্যাপিটল ভবনের আশপাশ ছেড়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই।
আইন প্রণেতাদের এরমধ্য দিয়েই আসতে হবে। তবে যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ থাকায় বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করবে না। তবে কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের পর কী হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।
এদিকে, তাণ্ডবের ঘটনার পর ওয়াশিংটনের আশেপাশের এলাকাগুলো থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশকে ক্যাপিটল হিল ও আশেপাশের এলাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। এর আগে আইনপ্রণেতারা বাইডেনের জয় অনুমোদনের আগেই তাণ্ডবের কারণে আইনপ্রণেতাদের অধিবেশন স্থগিত হয়ে যায়।