না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন রবিন জ্যাকম্যান। ৭৫ বছর বয়সে শুক্রবার কেপ টাউনে মারা গেছেন সাবেক এই পেসার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার হলেও জ্যাকম্যান টেস্ট খেলতে পেরেছেন মোটে ৪টি। তবে ক্রিকেট ইতিহাসে তিনি আলাদা জায়গা নিয়ে আছেন না খেলা একটি টেস্টের কারণে, যেটি বাতিল হয়েছিল তার কারণেই! খেলা ছাড়ার পর দীর্ঘদিন ধরাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেছেন জ্যাকম্যান।
৩৫ বছর বয়সেও ১৯৮০ সালে ঘরোয়া মৌসুমে ১২১ উইকেট নিয়ে তাক লাগিয়ে দেন জ্যাকম্যান। তাকে দলে নেওয়ার ডাক প্রবল হয়। সুযোগও এসে যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বব উইলিস চোট পাওয়ার পর বদলি হিসেবে ডেকে পাঠানো হয় জ্যাকম্যানকে।বিপত্তি বাধে এরপরই। সফরের দ্বিতীয় টেস্ট ছিল গায়ানায়।
কিন্তু গায়ানা সরকার জ্যাকম্যানকে ভিসা দিতে আপত্তি জানায়। তার স্ত্রী ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। বর্ণবাদ নীতির কারণে তখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু স্ত্রীর সুবাদে সেদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স ও রোডেশিয়ার (এখনকার জিম্বাবুয়ে) হয়ে ততদিনে ১১ মৌসুম খেলে ফেলেছেন জ্যাকম্যান। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সেই সংযোগের কারণেই ভিসা দেয়নি গায়ানা সরকার।
কিন্তু ইংল্যান্ডের টিম ম্যানেজমেন্ট রাজনৈতিক এই চাপের কাছে মাথানত করতে অস্বীকৃতি জানায়। এই টানাপোড়েনে টেস্টই বাতিল হয়ে যায়। তবে ক্যারিবিয়ান দেশগুলোর সরকার মিলে সিদ্ধান্ত নেয় সিরিজ বাতিল না করার। জ্যাকম্যান ভিসা পান। পরের টেস্টে বারবাডোজে অভিষেক হয় তার, ১৯৮১ সালের মার্চে। ৩৫ বছর বয়সে টেস্ট অভিষেক স্মরণীয় করে রাখেন তিনি ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে। প্রথম ইনিংসে নেন গর্ডন গ্রিনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স ও ক্লাইভ লয়েডের উইকেট।
স্বাভাবিকভাবেই খুব বেশি লম্বা হয়নি তার টেস্ট ক্যারিয়ার। ৪ টেস্ট খেলে নিয়েছেন ১৪ উইকেট। ওয়ানডে খেলেছেন ১৫টি, উইকেট ১৯টি।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ক্যারিয়ার তার অনেক সমৃদ্ধ। ৩৯৯ ম্যাচে তার শিকার ১ হাজার ৪০২ উইকেট। এর মধ্যে প্রিয় সারের হয়েই নিয়েছেন ১ হাজার ২০৬ উইকেট। লোয়ার অর্ডারে তার ব্যাটের হাতও মন্দ ছিল না। রান করেছেন সাড়ে ৫ হাজার। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ২৮৮ ম্যাচে উইকেটে ৪৩৯টি।