দেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে ঘিরে ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ টিআইবি’র নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি কোনো শুভ ইঙ্গিত বহন করে না। পোশাকখাতের কর্মী ছাটাই ও সুশাসন নিয়ে ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ- টিআইবি গত বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) যে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তার মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলে এ মন্তব্য করেছে তৈরি পোশাক প্রস্ততকারক ও রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ।
রোববার (২০ ডিসেম্বর) টিআইবি এর ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে লিখিত প্রতিক্রিয়ায় একথা জানান সংগঠনটির সভাপতি ড. রুবানা হক।
ড. রুবানা হক তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ‘তৈরি পোশাকখাতে করোনাভাইরাস উদ্ভূত সংকট সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাকে গবেষণা প্রতিবেদন হিসেবে দাবি করা হলেও এটি গবেষণার ন্যূনতম মানদণ্ড ও ন্যায়নীতি অনুসরণ করে করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয় না। বরং এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে টিআইবি তার নিজ সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে এবং গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
এমনকি শিল্পকে ঘিরে এহেন নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি কোনো শুভ ইঙ্গিত বহন করে না এবং এসব কর্মকাণ্ডের পেছনে কোনো দুরভিসন্ধি আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন বলেও মনে করেন বিজিএমইএ সভাপতি।
তথ্য নির্বাচন, তথ্যের বিশ্লেষণে পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ তুলে বিজিএমইএ বলছে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যেসব উৎস হতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে তা পুন:মূল্যায়ন হয়নি বরং এসব উৎস হতে প্রাপ্ত তথ্য কতটা সম্পূর্ণ, হালনাগাদ, সঠিক ও পক্ষপাতহীন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।
বিজিএমইএ বলছে, সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটিতে অস্পষ্টতার ছাপ স্পষ্টভাবে লক্ষণীয় যেখানে ‘প্রায়’, ‘অধিকাংশ’, ‘অনেক ক্ষেত্রে’, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যা পরিমাপ যোগ্য নয় এবং বিষয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর ধারণা দেয়। লে-অফ, ছাঁটাই, মজুরি না দেওয়া, স্বাস্থ্য-সুরক্ষা গাইডলাইন অমান্য, ইত্যাদি গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে এ ধরণের অস্পষ্ট ও ঢালাও অভিযোগ এবং অপবাদ গবেষণার শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে।
গবেষণায় কিছু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে এবং অনেক প্রতিবেদন এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও বিজিএমইএ এর অভিযোগ।
এছাড়া লে-অফ, বেতন-ভাতা, প্রণোদনার হার ও পরিমাণ, ইইউ ও জার্মানির ফান্ড বিতরণে অবহেলা, স্বচ্ছতা সংক্রান্ত বিষয়ে টিআইবির দাবিরও সমালোচনা করা হয়েছে বিজিএমইএ এর পক্ষ থেকে।
পোশাক খাত নিয়ে টিআইবির ওই গবেষণা প্রতিবেদনে কর্মী ছাঁটাই, কম বেতন দেয়া, করোনা মহামারিকালে অপরিকল্পিতভাবে কারখানা চালু রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় এই গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।