ফ্রান্সে ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করে আইন পাস

আন্তর্জাতিক

ফ্রান্সে মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে একটি আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে ফ্রান্সের মন্ত্রিসভা। দেশটিতে বেশ কয়েকটি চরমপন্থী হামলার পর ফ্রান্সের মন্ত্রিসভা এই আইনের অনুমোদন দিলো। খবর বিবিসির।
দেশটির প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ বলছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রুখতেই এই বিল আনা হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রী, রাজনীতিবিদরা বলছেন, কট্টরপন্থী মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য নিয়েই বিল আনা হয়েছে। শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে হত্যা ও কার্টুন বিতর্কের পর এই আইন এনেছেন মাক্রোঁ। মন্ত্রিসভায় বিল অনুমোদিত হয়েছে। এবার পার্লামেন্টে বিতর্ক হবে। তার আগে বিলে কী আছে, তার অনেকটাই সামনে এসেছে।
বিবিসি জানায়, এই আইনে ঘরে ইসলামি শিক্ষায়ও কড়াকড়ি আনা হয়েছে। শিশুদের বয়স তিন বছর হলেই স্কুল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া ঘরোয়া শিক্ষা দেয়া যাবে না। মূলত কঠোর অনুশাসন শেখার ‘অপ্রকাশ্য’ স্কুল বন্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আইনটিতে আরেকটি ধারায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক মসজিদকে সরকারিভাবে নিবন্ধিত হতে হবে, যাতে সহজে সেগুলোকে শনাক্ত করা যায়। মসজিদে বিদেশি ফান্ড নিষিদ্ধ হবে না তবে সেটি ১০ হাজার ইউরোর বেশি হলে ঘোষণা দিতে হবে।
সরকারি অফিসে ধর্মীয় পোশাক নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হয়েছে মার্কেট, সুইমিংপুল ও পরিবহন কর্মীদের মধ্যেও। এর মাধ্যমে নারীদের হিজাব পরার ওপর আরও বেশি কড়াকড়ি আরোপ হলো।
আলজাজিরা জানিয়েছে, মসজিদ, সমিতি, সরকারি অফিস এবং স্কুলগুলোতে নজরদারি বাড়াতে আইনটি আনছে ফ্রান্স। তবে ৫০টি ধারার এ আইনে ‘ইসলাম’ বা ‘মুসলিম’ কোনো শব্দই উল্লেখ করা হয়নি।
মুসলিম বিরোধী আইনটি নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক উঠলে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্যাসটেক্স জানান, এটি সুরক্ষার আইন। কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে এ আইন নয়। চরমপন্থা থেকে মুসলিমদের এটি মুক্তি দেবে।
সামনে কয়েক মাসে পার্লামেন্টের অধিবেশনে আইনটি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করবেন ফ্রান্সের আইনপ্রণেতারা। এরপর এটি চূড়ান্তভাবে পাস হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে আলোচনা করে অক্টোবরে মুসলিম চরমপন্থীদের হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন ইতিহাসের এক শিক্ষক। এরপর মুসলিমবিরোধী কড়া অবস্থান নেয় ফ্রান্স সরকার। এপি, এএফপি, রয়টার্স

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *