ভারতের করোনা পরিস্থিতি বিপজ্জনক করে তুলবে বায়ুদূষণ

আন্তর্জাতিক

ভারতের রাজধানী দিল্লীসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে ভয়াবহ দূষণের মৌসুম ফিরে আসছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে দূষণের তীব্রতা বৃদ্ধির ফলে বায়ুর গুণগত মানের চরম অবনতি হচ্ছে।

নতুন এক গবেষণা বলছে, বায়ুর এমন বিপর্যয় ভারতের করোনা পরিস্থিতি অবনতির জন্য আরও ভয়াবহ দুঃসংবাদ নিয়ে আসছে। কেননা, বিশ্বের অনেক গবেষণা বলছে, বায়ুদূষণের কারণে কোভিড-১৯ সংক্রমহার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষণায় দেখা গেছে যে, বায়ুতে বিপজ্জনক দূষণকারী বস্তুকণার ২.৫ মাইক্রোগ্রাম ঘনমিটার বৃদ্ধিতে করোনার মৃত্যুর হার ৮ শতাংশ করে।

যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের আরেকটি গবেষণায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের বৃদ্ধি এবং বায়ুদূষণকারী পদার্থ ও নাইট্রোজেন অক্সাইড, যানবাহনের ধোঁয়া, জীবাশ্ম জ্বালানীর মাত্রারিক্ত ব্যবহারের সংযোগ রয়েছে।

গবেষণাটির সহ-লেখক মার্কো ট্রাভাগ্লিও বিবিসিকে জানান, এ জাতীয় দূষণকারী বস্তুকণা প্রদাহের মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এবং শ্বাসকষ্টজনিত ভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

দিল্লিতে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বায়ুদূষণ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতাকে ছাড়িয়ে গেছে। বায়ুদূষণের মাত্রা চরম বৃদ্ধি পেয়েছে।

বেশ কয়েক মাস লকডাউনের ফলে দিল্লির লোকজন পরিচ্ছন্ন বায়ুতে শ্বাস নিতে পারছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি আবারও বেড়ে গেছে এই ভয়াবহতা।

তবে দূষণের ফলে কোভিড ১৯ এর ভয়াবহতা কতটা বেড়ে যেতে পারে, সে বিষয়ে ভারতে কোনো গবেষণা বা পরীক্ষা দেখা যায়নি। যদিও চিকিৎসক এবং মহামারী বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করে গেছেন যে, বিষাক্ত বায়ু করোনাভাইরাস মোকাবেলায় মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি করবে।

ভারত বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমণ দেশ। দেশটিতে প্রায় ৭৬ লাখ মানুষ আক্রান্ত ও ১ লাখ ১৫ হাজারের অধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুদূষণের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে এই সংখ্যা বাড়িয়ে তুলবে।

মহামারীর ফলে ক্ষতিগ্রস্থ শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম দিল্লি। আর সেই দিল্লিতেই বাড়ছে বায়ুদূষণের তীব্রতা।

‘এই শীতে দিল্লির পরিস্থিতি সত্যিই মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে’- বলছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও শীর্ষ গবেষক ড. ফ্রান্সেসকা ডোমিনিসি।

নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির শীতের সময় বাতাস দূষিত থাকে। কেননা, এসময় যানবহান ও শিল্প কারখানার বর্জ্য, আতশবাজি, জীবাশ্ম জ্বালানির অতি ব্যবহার বাতাসকে বিষিয়ে তুলে। এই অবস্থা ভাইরাসও বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন গবেষকরা।

এই অবস্থায় দূষণ কমাতে না পারলে ভারতের কোভিড-১৯ মোকাবেলাও বাধাগ্রস্ত হবে, তাই ভারতের দূষণ কমানোর উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।ণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে যায়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *