এটিএন বাংলা, ওয়াসা ভবন, ২য় তলা, ৯৮ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ
ফোনঃ +88-02-55011931
Design & Developed by:
এ সম্পর্কিত আরও খবর g
নিজস্ব প্রতিবেদক : ৫৪ ধারা খারাপ না হলেও এর অপব্যবহার খারাপ বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। অন্যদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ৫৪ ধারার অপব্যবহার করা হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের নির্দেশনা দিয়ে উচ্চ আদালতের রায় দেয়ার পরপরই সচিবালয়ে আলাদাভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া জানান। তারা জানান,পূর্ণাঙ্গ রায়ের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা, রায়ে বিশেষ কোন নির্দেশনা থাকলে বাস্তবায়ন করা হবে। এর আগে মঙ্গলবার পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তারের ধারা (৫৪ ধারা) ও পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ধারা (১৬৭ ধারা) সংশোধনের নির্দেশ দেয়া হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখে রায় দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত- সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার। হাইকোর্টের নির্দেশনায় বলা আছে, অন্য মামলায় আটক দেখানোর জন্য ৫৪ ধারায় কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। একইসঙ্গে গ্রেফতারের সময় পুলিশ তার পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে। এছাড়া কাউকে গ্রেফতারের এক ঘন্টার মধ্যে তার স্বজনদের জানাতে হবে। আর গ্রেফতারের ৩ ঘন্টার মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে গ্রেফতারের কারণ জানাতে হবে। জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে স্বজন ও আইনজীবীদের উপস্থিতিতে, কাচঘেঁরা কক্ষে। হাইকোর্টের দেয়া এসব নির্দেশনা এই রায়ের ফলে পুলিশ মানতে বাধ্য হবে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা। প্রায় এক যুগ আগে হাই কোর্ট বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার সংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা এবং রিমান্ড সংক্রান্ত ১৬৭ ধারা সংশোধনের নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছিলেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের করা আপিল-ই মঙ্গলবার খারিজ করে দিলেন আপিল বিভাগ। এর আগে গত ১৭ মে হাইকোর্টের দেওয়া রায় চ্যালেঞ্জ করে রাষ্ট্রপক্ষ যে আপিল করেছিল, তার শুনানি শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। গ্রেপ্তারের পরে আসামির সঙ্গে কী আচরণ করা হবে এ নিয়ে আদালতের নির্দেশনা মানছে না পুলিশ। ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার এবং জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানিতে এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেনে প্রধান বিচারপতি। বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা ও রিমান্ড সংক্রান্ত ১৬৭ ধারা বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনার বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি প্রায় একযুগ পরে অনুষ্ঠিত হয়। গত ২২ মার্চ শুরু হওয়া এই শুনানি শেষ গত ১৭ মে। শুনানির সময় আদালত, ৫৪ ধারার অপপ্রয়োগ এবং আসামি গ্রেপ্তারের পরে পুলিশের আচরণ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। ১৯৯৮ সালে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে শামীম রেজা রুবেল নামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার আকরাম হোসেন। গ্রেপ্তারের পরদিন মিন্টো রোডের গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে মারা যান রুবেল। এ ঘটনায় রুবেলের বাবা রমনা থানায় আকরামসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ২০০২ সালে বিচারিক আদালত আকরামসহ ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। এরপর তৎকালীন সরকার রুবেল হত্যা তদন্তের জন্য বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের সমন্বয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে কয়েকটি সুপারিশ করে। সুপারিশ বাস্তবায়িত না হওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট ব্লাস্ট হাইকোর্টে রিট করে। ওই রিটের শুনানি শেষে ২০০৩ সালে বেশ কিছু নির্দেশনা দেয় হাইকোর্ট। সরকার নির্দেশনাগুলোর বিপক্ষে আপিলের আবেদন করে।