পারমাণবিক বোমা ও অস্ত্র তৈরির দিকে অগ্রসর ইরান, উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের

পারমাণবিক বোমা ও অস্ত্র তৈরির দিকে অগ্রসর ইরান, উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের

আন্তর্জাতিক
ইরান দ্রুত পারমাণবিক বোমা ও অস্ত্র তৈরির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটনে একজন শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তা মঙ্গলবার এ কথা বলেছেন। তিনি আশা করেন তেহরানকে এই পারমাণবিক কর্মসূচি সঙ্কুচিত করতে শিগগিরই আলোচনা শুরু হবে। ইরানের এই পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে এরই মধ্যে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলি জাতীয় নিরাপত্তা টিমের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

এ খবর দিয়েছে অনলাইন আরব নিউজ। এতে আরো বলা হয়, কূটনৈতিক, সামরিক ও গোয়েন্দা এজেন্সিগুলোর ইউএস-ইসরাইল স্ট্র্যাটেজিক কনসালটেটিভ গ্রুপের ওই মিটিংয়ে যোগ দিয়েছিলেন ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইয়াল হুলাতা এবং হোয়াইট হাউজে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান।

ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নেতৃত্বে ২০১৫ সালে এক ঐতিহাসিক চুক্তি করে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো।এর ফলে ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত অবরোধ শিথিল করে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় আসেন নতুন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ক্ষমতায় আসার দুই বছরের মধ্যে ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেন। এর কড়া সমালোচনা ওঠে ইউরোপসহ সমমনা দেশগুলো থেকে।

ইরানও শুরু করে তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি। কিন্তু তাদেরকে এ পথ থেকে বিরত রাখতে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই প্রতিশ্রুতি দেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বারাক ওবামার করা ওই চুক্তি আবার পুনর্বহালের প্রতিশ্রুতি দেন এবং এখনও এর পক্ষে রয়েছেন।

এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে আলোচনা চলছে। ভিয়েনাতে এরই মধ্যে আলোচনায় ওই চুক্তি পুনরুজ্জীবিতকরণের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। কিন্তু তা স্থবির হয়ে পড়ে। কারণ, প্রথমে এ ইস্যুটি ইরান নাকি যুক্তরাষ্ট্র সামনে নিয়ে আসবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।

বাইডেন প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা মঙ্গলবার বলেছেন, ভিয়েনায় সমঝোতার পথ এখনও উন্মুক্ত রয়েছে। ইরানিরা বিভিন্ন পক্ষের দিকে ইঙ্গিত পাঠাচ্ছে। এসব পক্ষ ভিয়েনায় ফিরে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা অবশ্যই এ প্রক্রিয়ায় নতুন করে যুক্ত হতে চাই। উপসাগরীয় দেশগুলোতে সংশয় থাকলেও ইসরাইল এবং বাইডেন প্রশাসন দৃঢ়তার সঙ্গে মনে করে, এই সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে উত্তম ব্যবস্থা হলো কূটনৈতিক পথ।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, হোয়াইট হাউজ এবং ইসরাইলে নতুন সরকার একমত হয়েছে। তারা মনে করে, ২০১৫ সালের চুক্তি থেকে একতরফাভাবে ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রতে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর থেকে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচিতে দ্রুত অগ্রসর হয়েছে। তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে। এ বিষয়টি উদ্বেগজনক। এই কর্মসূচির লাগাম টেনে ধরতে কূটনৈতিক উপায় অবলম্বন হবে উত্তম ব্যবস্থা।

তবে ইরানের ওপর ডনাল্ড ট্রাম্প যে অবরোধ দিয়েছিলেন, তা প্রত্যাহারের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যদি এক্ষেত্রে কূটনৈতিক উদ্যোগ ব্যর্থ হয়, তাহলে অন্য উপায়ে অগ্রসর হতে হবে। আমরা মনে করি এখন ইরানের সিদ্ধান্ত নেয়ার পালা।
ওদিকে ইরান স্বীকার করেছে জুনে ইরানের ইউরেনিয়াম সেন্ট্রিফিউজ ওয়ার্কশপে যে স্যাবোটাজ করে হামলা করেছিল ইসরাইল, তাতে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এর আগে ইরান বলেছিল, তারা ওই হামলা বানচাল করে দিয়েছে।

Visits: 0

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *