হ্যারিকেন হেনরি বিদায় নিতে না নিতেই যুক্তরাষ্ট্রে এগিয়ে আসছে আরও একটি হ্যারিকেন। শনিবার থেকে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য লুইজিয়ানার গালফ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে হ্যারিকেন আইদা নামের এই ঝড়। প্রবল শক্তিশালী এই ঝড়ের হাত থেকে বাঁচতে বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন অঙ্গরাজ্যটির হাজার হাজার মানুষ। রোববার (২৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যা নাগাদ হ্যারিকেন আইদা গালফ অব মেক্সিকো ও নিউ অরলিয়ানে আছড়ে পড়তে পারে। এসময় প্রবল শক্তিশালী এই হ্যারিকেনের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৪০ মাইল (২২০ কিলোমিটার)।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ১৬ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের এই অঞ্চলেই আছড়ে পড়েছিল হ্যারিকেন ক্যাটরিনা। ভয়াবহ সেই দুর্যোগে ক্ষতিও হয়েছিল অনেক বেশি। এবার ফের আরও একবার প্রবল ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আশঙ্কা, হারিকেন আইদা ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের আকার নিতে পারে।
এদিকে হ্যারিকেন আইদার কারণে লুইজিয়ানার বিপদাপন্ন মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর অঙ্গরাজ্যটির বেশ কয়েকটি মোটরওয়েতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। লুইজিয়ানার গভর্নর জন বেল এডওয়ার্ডস জানিয়েছেন, হ্যারিকেন আইদা এতোটাই শক্তিশালী যে গত ১৫০ বছরের মধ্যে এই ঝড়টি সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের সৃষ্টি করতে পারে।
জন বেল এডওয়ার্ডস জানিয়েছেন, ১৮৫০ সালের পর থেকে সম্ভবত এমন ভয়ঙ্কর ঝড় আগে আছড়ে পড়েনি। ঝড়ের গতিবেগ যে ক্রমশ চরমে পৌঁছাচ্ছে সেই সতর্কবার্তাও দিয়েছেন তিনি। এছাড়া পার্শ্ববর্তী মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের গভর্নর সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।
১৬ বছর আগে হ্যারিকেন ক্যাটরিনায় বিধ্বস্ত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ওই অঞ্চল। সেই ভয়াবহ স্মৃতি এখনও যথেষ্ট আতঙ্কের কারণ। সেসময় নিউ অরলিয়ান শহরের ৮০ শতাংশ অঞ্চল ভেসে যায় বন্যায়, মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ৮০০ মানুষের। ভয়াবহ সেই ঝড়ে ক্ষতিও হয়েছিল কোটি কোটি টাকার।
এবার হ্যারিকেন আইদা নিয়ে যাতে আগে থেকে সবাই সতর্ক থাকেন, সে ব্যাপারে বারবার সতর্ক করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। যেকোনো সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের অন্য এক প্রান্তে আছড়ে পড়েছিল হ্যারিকেন হেনরি। ঝড়ের কারণে সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠেছিল। মূলত সাউদার্ন নিউ ইংল্যান্ড এবং লং আইল্যান্ডের উপকূলে এই ঝড় আছড়ে পড়ে।
এছাড়া হ্যারিকেনের কারণে ভারী বৃষ্টি হয় বিস্তীর্ণ এলাকায়। নিউ ইংল্যান্ডের কানেকটিকাট, ম্যাসাচুসেটস, নিউ হ্যামশয়ার, হার্মন্ডসহ একাধিক এলাকায় ঝড়ের প্রভাব পড়ে।