বাজেট অধিবেশন বসছে বিকেলে

বাজেট অধিবেশন বসছে বিকেলে

বাংলাদেশ
স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করেই শুরু হচ্ছে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন। বুধবার (২ জুন) বিকেলে অধিবেশন শুরু হবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে অধিবেশন হবে সংক্ষিপ্ত।  একাধিক দফা বিরতি দিয়ে ১২ কার্যদিবসের মতো অধিবেশন চলতে পারে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট পেশ হবে।
সংসদ সচিবালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যাবতীয় প্রস্তুতিসহ সার্বিক পরিকল্পনা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গতবারের মতো এবারও রোস্টার করে সংসদ সদস্যরা অধিবেশনে অংশ নেবেন। প্রতি কার্যদিবসে উপস্থিতি সংখ্যা ১০০ থেকে ১২০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে।
এক্ষেত্রে একজন সংসদ সদস্য তিন থেকে চার কার্যদিবস অধিবেশনে যোগ দেবেন। যোগদানের জন্য তাদের করোনা নেগেটিভ সনদ থাকা বাধ্যতামূলক। একদিন করোনার টেস্টের নেগেটিভ ফলাফলের ভিত্তিতে পরপর দুদিন অধিবেশনে যোগ দেওয়া যাবে। ফলে সংসদে যোগদানের জন্য  সংসদ সদস্যদের একাধিকবার নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন পড়বে।
গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশও সীমিত করা হচ্ছে এ অধিবেশনে। সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, সংসদে বাজেট পেশের দিনসহ দুই-তিন দিন সীমিত সংখ্যক গণমাধ্যমকর্মীদের সংসদে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের প্রয়োজন হবে করোনা নেগেটিভ সনদ। গণমাধ্যমকর্মীদের সংসদ ভবনে প্রবেশের সুযোগ দিলেও অধিবেশন চলাকালে তারা গ্যালারিতে বসতে পারবেন না।
অন্যান্যবার বাজেট পেশের দিনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অধিবেশনে আমন্ত্রণ জানানো হলেও এবার তা হচ্ছে না। অবশ্য করোনার কারণে গত বছরও বাজেট অধিবেশনে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
অধিবেশন শুরুর পর চলতি সংসদের সদস্য আবদুল মতিন খসরু ও আসলামুল হকের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও গ্রহণের পর অধিবেশন মুলতবি করা হবে। পরের দিন বিকেল ৩টায় বাজেট প্রস্তাব ও অর্থ বিল উত্থাপন করা হবে। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট হবে অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের তৃতীয় বাজেট এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ত্রয়োদশ বাজেট।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বাজেট প্রস্তাব উত্থাপনের পর দুই দিন বিরতি দিয়ে ৬ জুন থেকে বাজেট আলোচনা শুরু হবে। ওইদিন থেকে বেলা ১১টায় অধিবেশন শুরু হবে। সোমবার (৭ জুন) সম্পূরক বাজেট পাসের পর অধিবেশন আবারও মুলতবি করা হবে। এরপর টানা ছয় দিন বিরতি দিয়ে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা ১৪ জুন শুরু হবে। এ আলোচনা চলবে ১৫, ১৬, ১৭ ও ২৮ জুন। সাধারণ আলোচনা শেষে ২৯ জুন অর্থবিল এবং ৩০ জুন মূল বাজেট ও নির্দিষ্টকরণ বিল পাস হবে। পরদিন পহেলা জুলাই বাজেট অধিবেশন শেষ হবে।
নতুন বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর মাত্র পাঁচ দিন আলোচনা হবে। আলোচনায় নির্ধারিত সংখ্যক সরকার ও বিরোধী দলের সদস্য অংশ নেবেন। পুরো বাজেট পাসের প্রক্রিয়া ব্যয় হবে ১০ দিন। সেক্ষেত্রে ২০ থেকে ২৫ ঘণ্টা বাজেট আলোচনা হতে পারে। প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এ আলোচনা চলবে। অধিবেশনে বাজেট ছাড়াও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
করোনা পরিস্থিতি গত বছর বাজেট অধিবেশনের সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হয়েছিল। গত বছর মাত্র ৯ কার্যদিবস চলে বাজেট অধিবেশন। যা বাংলাদেশের বাজেট অধিবেশনের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত।
বুধবার বিকেল ৫টায় সংসদের অধিবেশন শুরু হবে। শুরুতেই সভাপতিমণ্ডলী মনোনয়ন দেওয়া হবে। এরপর রয়েছে শোক প্রস্তাব। দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশ্নোত্তর পর্ব রয়েছে। তবে এ দিনের বৈঠকে শোকপ্রস্তাব ছাড়া অন্য সব বিষয়ে স্থগিত রাখা হবে। অবশ্য প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উত্থাপিত হতে পারে।
সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী চলতি সংসদের কোনো সদস্য মারা গেলে অধিবেশনে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হয় এবং সেদিন অধিবেশন মুলতবি করা হয়। চলতি সংসদের সদস্য আসলামুল হক ও আব্দুল মতিন খসরু যথাক্রমে ৪ ও ১৪ এপ্রিল মারা গেছেন। তাদের স্মরণ করে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *