অভিনেত্রী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন এবং সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্লাহ এই পরোয়ানা জারি করেন।
বুধবার আদালত সূত্রে জানা গেছে, শাওনের সৎমা নিশি ইসলাম দায়ের করা একটি মামলার ভিত্তিতে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী পারভেজ।
মামলায় যাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন—শাওনের বাবা এবং নিশি ইসলামের স্বামী মোহাম্মদ আলী, তাঁর ভাগনে মোখলেছুর রহমান মিল্টন, শাওনের বোন মাহিন আফরোজ শিঞ্জন ও সেঁজুতি, শিঞ্জনের স্বামী সাব্বির, সুব্রত দাস, মাইনুল হোসেন এবং পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল। মামলার আরও দুই আসামি হলেন পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও উপপরিদর্শক শাহ আলম।
গতকাল ছিল মামলার ধার্য তারিখ। সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও শাহ আলম আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে তা মঞ্জুর করা হয়। তবে অন্য আসামিরা আদালতে হাজির না হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
জানা যায়, চলতি বছরের ১৩ মার্চ নিশি ইসলাম ১২ জনকে আসামি করে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়, তাঁকে হত্যাচেষ্টা ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। আদালত ওই দিন বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আসামিদের সমন জারি করেন এবং ২২ এপ্রিল হাজির হওয়ার জন্য দিন ধার্য করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২৪ সালের শুরুতে শাওনের বাবা মোহাম্মদ আলী একটি ম্যারেজ মিডিয়ায় ‘পাত্রী চাই’ বিজ্ঞাপন দেন। সেখান থেকেই নিশি ইসলামের সঙ্গে পরিচয় ও পরে ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁদের বিয়ে হয়। বিষয়টি জানার পর শাওন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিশির ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালান। ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁরা নিশিকে বিয়ের ঘটনা গোপন রাখতে বলেন এবং তালাক দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করেন। পরে ৪ মার্চ গুলশানের একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে নিশিকে তালাকনামায় স্বাক্ষরের জন্য চাপ দেন এবং রাজি না হওয়ায় শারীরিকভাবে আঘাত করা হয়, এমনকি প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে মারধর করা হয়।
বাদীর অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, পরে তাঁকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয় এবং সেখানে পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তালাকনামায় সই করাতে চাপ দেওয়া হয়। অস্বীকৃতি জানালে তাঁকে মারধর করা হয় এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়, যেখানে তিনি ছয় মাস আটক ছিলেন।