অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এএনইউ) বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া সম্মানসূচক আইন ডিগ্রি পুনর্মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বিবেচনা করছে, ১৯৯৯ সালে দেওয়া এই সম্মাননা বহাল থাকবে কি না।
সম্প্রতি হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা, গুম ও অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ক্যানবেরা টাইমস–এর বরাতে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি কমিটি বিষয়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করছে। তারা বলেছে, পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চায় না।
এ সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো, যখন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজনৈতিক ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগে হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এছাড়া, গত বছরের অক্টোবরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অন্তর্বর্তী সরকার জানায়, ছাত্রদের নেতৃত্বে হওয়া বিক্ষোভ দমন করতে হাসিনার নির্দেশেই সেনাবাহিনী অভিযানে নামে, যাতে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ শেখ হাসিনার শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেছে, সেনাবাহিনীকে গুলি চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সংস্থাটির উপ-এশিয়া পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি আন্তর্জাতিক মহলকে আহ্বান জানিয়েছেন, শেখ হাসিনাকে এই সহিংসতা থামাতে চাপ প্রয়োগ করার জন্য।
এএনইউর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন ডিগ্রি বাতিলের ঘটনা আগে ঘটেনি, এমনকি এর কোনো নির্দিষ্ট দৃষ্টান্তও নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয় এখন বিস্তারিত বাতিল প্রক্রিয়া নির্ধারণের কাজ করছে।
এদিকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের কাছে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করেছে, যা তাকে গ্রেপ্তার ও প্রত্যর্পণের উদ্দেশ্যে বৈশ্বিক পুলিশি সহযোগিতার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
