ভারতের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৯৯ বিলিয়ন ডলারে।

আন্তর্জাতিক

ভারতের ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি পৌঁছেছে ৯৯.২ বিলিয়ন ডলারে। চলতি বছরের মার্চে শেষ হওয়া এই অর্থবছরে ইলেকট্রনিক ও ভোগ্যপণ্য আমদানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ায় এই ঘাটতির পরিমাণও বেড়েছে। ভারতের বাণিজ্য সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এই প্রতিবেদনটি এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো, যখন সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতসহ বেশ কয়েকটি প্রধান বাণিজ্য অংশীদারের জন্য অধিকাংশ শুল্ক বৃদ্ধি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন। তবে চীনা পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে ব্যাপকভাবে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, চীনা কোম্পানিগুলো মার্কিন বাজারের পরিবর্তে অন্য দেশে রপ্তানি বাড়াতে পারে।

চলতি বছরের মার্চ মাসে চীন থেকে ভারতের আমদানি ২৫ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৭ বিলিয়ন ডলারে। এর মধ্যে ইলেকট্রনিকস, বৈদ্যুতিক ব্যাটারি ও সোলার প্যানেল অন্যতম। মার্চ পর্যন্ত ১২ মাসে ভারতের চীনা পণ্যের আমদানি মোট ১১৩.৫ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছে, জানিয়েছে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে, মার্চ মাসে ভারতের চীনে রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ১৪.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১.৫ বিলিয়ন ডলারে। পুরো অর্থবছরে ভারতের চীনে মোট রপ্তানি ১৪.৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

দিল্লিভিত্তিক গ্লোবাল ট্রেড ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব এই পরিস্থিতিকে ভারতের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, “বাড়তে থাকা আমদানি ভারতের অর্থনৈতিক কাঠামোর গভীর নির্ভরশীলতাকে তুলে ধরে।”

তাঁর মতে, ইলেকট্রনিকস, ওষুধ ও ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে ভারতের রপ্তানি বাড়লেও, এই শিল্পগুলো ব্যাপকভাবে চীনা যন্ত্রাংশের ওপর নির্ভরশীল, যা আমদানিকে আরও ত্বরান্বিত করছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০১৩-১৪ সালের তুলনায় এখন চীনের ভারতের বাজারে রপ্তানি কম হলেও, তখনকার তুলনায় রুপির মূল্য বেশি ছিল। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, চলতি অর্থবছরে ভারতের আমদানি ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে, কারণ চীনা কোম্পানিগুলো মার্কিন বাজারে রপ্তানির বিকল্প খুঁজে বিভিন্ন দেশে পণ্য পাঠাচ্ছে।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চীন বর্তমানে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে মোট বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২৭.৭ বিলিয়ন ডলারে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে শীর্ষ অবস্থানে।

এদিকে, ভারত সরকার জানিয়েছে যে চীনসহ অন্যান্য দেশ থেকে আসা সস্তা পণ্যের প্রবাহ নজরে রাখতে একটি বিশেষ নজরদারি ইউনিট গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। একই সঙ্গে বিদেশি রপ্তানিকারকরা যাতে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ফাঁকি দিতে না পারে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *