সাড়ে ১২ হাজার বছর আগে বিলুপ্ত ‘গেম অব থ্রোনস’ খ্যাত নেকড়ে আবার ফিরিয়ে এনেছেন বিজ্ঞানীরা

বিনোদন

নেকড়ের বিলুপ্ত প্রজাতি ডায়ার উলফ, যা জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ‘গেম অব থ্রোনস’ সিরিজের মাধ্যমে, সেটিকে প্রায় ১২,৫০০ বছর পর জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে আবার ফিরিয়ে এনেছে এক মার্কিন বায়োটেক প্রতিষ্ঠান—কলসাল বায়োসায়েন্সেস।

প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, তারা পৃথিবীর প্রথম সফল “ডি-এক্সটিঙ্কশন” বা বিলুপ্ত প্রাণীর পুনর্জন্ম ঘটিয়েছে। বিজ্ঞানীরা ‘Aenocyon dirus’ নামে পরিচিত এই বিলুপ্ত প্রজাতির জিনোম পুনর্গঠন করে পরীক্ষাগারে তিনটি ডায়ার উলফের শাবকের জন্ম দিয়েছেন।

এর আগে লোমশ ম্যামথ ফিরিয়ে আনতে পরীক্ষামূলকভাবে ইঁদুরে জেনেটিক পরীক্ষা চালিয়েছিল কলসাল। এবার তারা আধুনিক ধূসর নেকড়ের (গ্রে উলফ) ডিএনএ-তে পরিবর্তন এনে ডায়ার উলফের বিশেষ জিন যুক্ত করেছে। এই পরিবর্তিত ডিএনএ আধুনিক নেকড়ের ডিমে স্থাপন করা হয়, যা পরে ভ্রূণ হিসেবে গড়ে উঠে। পরবর্তীতে এগুলো সারোগেট কুকুরের গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয়।

এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জন্ম নেয় তিনটি সাদা রঙের নেকড়ে—রোমুলাস, রেমুস এবং খালেসি। নামগুলো রোমান পৌরাণিক কাহিনি ও ‘গেম অব থ্রোনস’ থেকে নেওয়া। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তারা ১৩ হাজার বছর পুরোনো দাঁত ও ৭২ হাজার বছরের পুরোনো খুলি থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে এই কাজ সম্পন্ন করেছেন।

ডায়ার উলফের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো—বৃহৎ দেহ, সাদা লোম, বড় দাঁত ও স্বতন্ত্র গর্জন—জিন সম্পাদনার মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। গবেষণাগারে ৪৫টি ভ্রূণ তৈরি করে কয়েকটি সারোগেট কুকুরে প্রতিস্থাপন করা হয়, যার মধ্যে তিনটির জন্ম সফলভাবে হয়েছে।

তবে এটিই প্রথম ডি-এক্সটিঙ্কশন নয়। ২০০৩ সালে স্পেনের বিজ্ঞানীরা বিলুপ্ত একটি ছাগল প্রজাতি ‘বুকার্ডো’র ক্লোন তৈরি করলেও, তা জন্মের কিছু পরেই মারা যায়। কলসাল এবার সফলভাবে জীবিত প্রাণী তৈরি করে ইতিহাস গড়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, তারা রেড উলফ নামে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা আরেক প্রজাতির ক্লোন তৈরি করেছে এবং ভবিষ্যতে উইলি ম্যামথও ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জিন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক বিশাল মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *