আবারও ডেঙ্গুর হুমকি, বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু—সতর্ক হতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা
প্রতি বছরই এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। ২০২৩ সালে বছরের শুরু থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও মার্চে এসে সংক্রমণ কিছুটা কমে আসে। তবে আগস্ট থেকে ফের ঊর্ধ্বমুখী হয় সংক্রমণ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২4 সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১,৯০২ জন। এ সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের, যাদের মধ্যে ৭১.৪ শতাংশ পুরুষ ও ২৮.৬ শতাংশ নারী। আক্রান্তদের মধ্যে ৬২.৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭.৫ শতাংশ নারী।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় আরও একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একই সময়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০ জন, যার মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি ৪ জন ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ৬ জন।
চলতি বছর এখনো বর্ষা মৌসুম শুরু হয়নি, তার আগেই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে—এতে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরোপুরি বৃষ্টি শুরু হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। ডেঙ্গু মূলত বর্ষাকালেই বেশি বিস্তার লাভ করে।
২০০০ থেকে ২০২২ সালের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে সাধারণত আগস্ট মাসে ডেঙ্গু সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়। তবে ২০২১ সাল থেকে এই প্রবণতায় পরিবর্তন এসেছে। এখন সংক্রমণের সর্বোচ্চ হার দেখা যাচ্ছে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে। ২০২২ সালে সর্বাধিক ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয় অক্টোবরেই।
২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুতে মারা যান ৮০ জন, যা বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেই বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত হন প্রায় ৩০ হাজার ৯৩৮ জন। এর মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বরেই আক্রান্ত হন ১৮ হাজারেরও বেশি।
এ বছরও পূর্বের অভিজ্ঞতার আলোকে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, আগাম ও অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কারণে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব আবারও বাড়তে পারে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখনই প্রয়োজন সঠিক প্রস্তুতি ও কার্যকর ব্যবস্থা—তা না হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তারা।