গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর। এরপর দুই দফায় মোট প্রায় ৫০ দিনের জন্য হামলা কিছুটা থেমেছিল। তবে এই পুরো সময় জুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর নিষ্ঠুর হামলায় প্রাণ হারিয়েছে ১৭ হাজারের বেশি শিশু, এবং ৩৯ হাজারের বেশি শিশু হয়ে পড়েছে অনাথ।
লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম *মিডল ইস্ট মনিটর* ফিলিস্তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফিলিস্তিনি শিশু দিবস (৫ এপ্রিল) উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী শুধু জীবননাশই ঘটায়নি, বরং শিক্ষা ব্যবস্থাকেও সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করেছে। ধ্বংস করেছে অসংখ্য স্কুল, বাধা দিয়েছে শিশুদের নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজা, জেরুজালেম এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরের ‘এরিয়া সি’-তে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন যুদ্ধজনিত নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। “১৭ হাজারের বেশি শিশু শহীদ হয়েছে—এই সংখ্যা শুধু পরিসংখ্যান নয়, বরং প্রতিটি শিশু একেকটি জীবন, স্মৃতি এবং অপূর্ণ সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি,”—বলা হয় মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
ইসরায়েলি হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নারী ও শিশুরা। সরকারি হিসাব অনুসারে, নিহত ও আহতদের ৬০ শতাংশের বেশি নারী ও শিশু, যার সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। ফিলিস্তিনের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের তথ্য অনুযায়ী, ফিলিস্তিনের মোট জনসংখ্যার ৪৩ শতাংশই ১৮ বছরের নিচে; এর মধ্যে পশ্চিম তীরে ৩৪ লাখ এবং গাজায় ২১ লাখ শিশু রয়েছে।
এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানা গেছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে ৩৯ হাজারের বেশি শিশু তাদের এক বা উভয় অভিভাবককে হারিয়ে অনাথ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫০ হাজার ৫২৩ জনে এবং আহত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৭৭৬ জন।