ভারতীয় পুলিশের দাবি, দিল্লিতে চুরি হওয়া মোবাইল ফোনগুলো বাংলাদেশে পাচার হয়ে সেখানে বিক্রি হয়।

বাংলাদেশ

দিল্লির মেট্রো স্টেশন, গণপরিবহন ও বাজার থেকে চুরি হওয়া মোবাইল ফোন বাংলাদেশে পাচার হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সম্প্রতি দিল্লি পুলিশের একটি অভিযানে এমন একটি চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে, যারা সংগঠিতভাবে এই কাজ চালিয়ে আসছিল। এ ঘটনায় চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মেট্রো স্টেশন, গণপরিবহন ও জনাকীর্ণ বাজার থেকে চুরি হওয়া মোবাইল দ্রুত শহরের বাইরে সরিয়ে নেওয়া হয়, যাতে কোনো প্রমাণ না থাকে। এরপর সেগুলো চোরাকারবারিদের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাচার করা হয়।

গত রোববার দিল্লি পুলিশের অপরাধ বিভাগ পশ্চিমবঙ্গের এক চোরাকারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে এবং প্রায় ২০ লাখ রুপি মূল্যের ৪৮টি দামি মোবাইল উদ্ধার করেছে। আটক ব্যক্তি, আবদুশ (২৪), উত্তর দিল্লির কোটওয়ালির সালিমগড় বাইপাসের কাছে ধরা পড়েন। তিনি চুরি হওয়া মোবাইলের একটি চালান নিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন, তখনই পুলিশ তাঁকে আটক করে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, আবদুশ এই চক্রের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, যারা মোবাইল চুরি, পাচার এবং অবৈধভাবে বিক্রির সঙ্গে জড়িত। দিল্লি পুলিশের অপরাধ বিভাগ জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল চুরি করে তা বাংলাদেশ বা নেপালে পাচারের জন্য কাজ করছে একাধিক চক্র।

অপরাধ দমন শাখার ডেপুটি কমিশনার আদিত্য গৌতম বলেন, চক্রটি চুরি হওয়া মোবাইল দ্রুত দিল্লি–এনসিআর এলাকা থেকে সরিয়ে ফেলত, যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শনাক্ত করতে না পারে। এসব ফোন স্থানীয়ভাবে বিক্রি করা হতো না, বরং চোরাকারবারিদের কাছে ২০০০–৩০০০ রুপিতে হস্তান্তর করা হতো। এরপর ফোনের বড় চালান পশ্চিমবঙ্গে পাঠিয়ে সেগুলো বাংলাদেশে পাচার করা হতো, যেখানে অবৈধ বাজারে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার রুপিতে বিক্রি হতো।

আবদুশের বিষয়ে পুলিশ আগেই তথ্য পেয়ে সালিমগড় বাইপাস এলাকায় ওঁত পেতে ছিল। তিনি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাঁকে আটক করা হয় এবং ব্যাগ তল্লাশি করে ৪৮টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

আবদুশ পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন, তিনি দেড় বছর ধরে চুরি হওয়া মোবাইল পাচারের সঙ্গে জড়িত। আর্থিক সংকটের কারণে ২০২৩ সালে তিনি এই অবৈধ কাজে যুক্ত হন। শুরুতে মোবাইল ফোনের স্ক্র্যাপ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, এরপর পরিচয় হয় চোরাই মোবাইল ব্যবসার মূল হোতা সামির ও সেলিমের সঙ্গে। কম দামে চুরি হওয়া মোবাইল কিনে পশ্চিমবঙ্গের বাজারে বিক্রি করতেন এবং কিছু ফোন বাংলাদেশেও পাচার করতেন।

আবদুশ আরও জানান, গত দেড় বছরে তিনি দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গে ৮০০ টিরও বেশি চুরি হওয়া মোবাইল পাচার করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *