২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত *স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার* সিনেমায় আলিয়া ভাটকে দেখে অনেকে ভেবেছিলেন, ‘এই মেয়ে তো বেশ চটপটে!’ তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে তাঁর ব্যক্তিত্ব, ক্যারিয়ারের অবস্থান এবং জীবনদর্শন। শুধু সফল অভিনেত্রীই নন, তিনি এখন বলিউডের অন্যতম আলোচিত সেলিব্রিটি মা। মাতৃত্ব ও ক্যারিয়ারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে কীভাবে তিনি নিজের যত্ন নিচ্ছেন, তা জানার জন্য অনেকেই গুগলে খোঁজ করেন। নতুন কর্মজীবী মায়েদের জীবনকে সহজ করতে আলিয়া ভাট দিয়েছেন কিছু পরামর্শ।
১. পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি
নতুন মায়েদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের একটি হলো ঘুমহীন রাত। রাতে ঠিকভাবে বিশ্রাম না পেলে দিনের কার্যক্রমে তার প্রভাব পড়ে। আলিয়ার মতে, সন্তান যখন ঘুমায়, তখন সুযোগ বুঝে মায়েরও ঘুমানো উচিত। দিনের মধ্যে যতবার সময় পাওয়া যায়, ততবার বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন।
২. সময় ব্যবস্থাপনা শিখুন
মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে কর্মজীবনে ফিরে আসা অনেক মায়ের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। সন্তান, সংসার ও পেশাগত দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে অনেকে হাসিমুখ হারিয়ে ফেলেন। আলিয়ার পরামর্শ, কোন সময়ে কোন কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন, তা বুঝতে হবে। সময় ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন করলে সবকিছু সামলানো তুলনামূলক সহজ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে পরিবারের সদস্য ও অভিজ্ঞদের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়াও জরুরি।
৩. নিজের শরীরের পরিবর্তন স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করুন
গর্ভকালীন ও প্রসব-পরবর্তী সময়ে নারীর শরীরে নানা পরিবর্তন আসে। হরমোনের ওঠানামার কারণে অনেকে পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনের সম্মুখীন হন। আলিয়ার মতে, এসব পরিবর্তন স্বাভাবিকভাবে নিতে হবে এবং শারীরিক সুস্থতার দিকেই বেশি মনোযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি, নিজের পছন্দের কাজ করার সময় বের করাও জরুরি।
৪. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তুলনায় বিভ্রান্ত হবেন না
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই মাতৃত্বের নানা মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও শেয়ার করেন। তবে নিজের বাস্তবতা আর অন্যদের পোস্ট করা জীবনযাত্রার মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পেয়ে হতাশ হওয়া উচিত নয়। আলিয়ার মতে, প্রতিটি মায়ের অভিজ্ঞতা আলাদা, তাই অন্যদের সঙ্গে তুলনা না করে নিজের জার্নিকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
৫. জীবনসঙ্গীর সঙ্গে বোঝাপড়া গড়ে তুলুন
সন্তানের যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব কেবল মায়ের একার নয়। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়া এবং প্রতিদিন কিছুটা সময় একসঙ্গে কথা বলার অভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দেন আলিয়া। এটি শুধু দাম্পত্য জীবনকেই মজবুত করে না, বরং সন্তান লালন-পালনের পথও সহজ করে।
৬. নিজের যত্ন নেওয়াটা বিলাসিতা নয়, প্রয়োজন
সবশেষে আলিয়া মনে করিয়ে দেন, একজন মা যত বেশি হাসিখুশি থাকবেন, তাঁর সন্তানও তত প্রাণোচ্ছলভাবে বেড়ে উঠবে। তাই নিজের যত্ন নেওয়া কোনো স্বার্থপরতা নয়, বরং এটি সুস্থ ও সুন্দর মাতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।