নারীদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া জঘন্য হামলা অত্যন্ত উদ্বেগজনক, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় দেশজুড়ে বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে দেশের অদম্য নারীদের সম্মাননা তুলে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই পুরস্কার প্রদান করেন।

পুরস্কারপ্রাপ্ত নারীরা হলেন—অর্থনীতিতে অবদানে শরিফা সুলতানা, শিক্ষা ও চাকরিতে অবদানে হালিমা বেগম, সফল জননী নারী মেরিনা বেসরা, জীবনসংগ্রামে জয়ী লিপি বেগম, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানে মো. মুহিন (মোহনা) এবং বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।

এসময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ সরকার অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে নিয়েছে। অনেক সময় নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তারা জানেন না কোথায় অভিযোগ করবেন। তাদের অভিযোগ জানানোর সুবিধার্থে হটলাইন চালু করা হয়েছে। এছাড়া পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ হালনাগাদ এবং যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০২৫ প্রণয়নের কাজ শুরু করা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, নারীর নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। নারীদের আর্থিক ক্ষমতায়নে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে, যেমন দুস্থ মায়েদের সহায়তা, নারীদের প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি, কর্মজীবী নারীদের জন্য হোস্টেল ও ডে কেয়ার সেন্টার সুবিধা প্রদান। এছাড়া আরও কী করা যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

ড. ইউনূস বলেন, “নারীদের ওপর যে জঘন্য হামলা ঘটছে তা গভীর উদ্বেগজনক। এটি আমাদের ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর স্বপ্নের পরিপন্থী। আমরা এই ‘নতুন বাংলাদেশ’ নির্মাণে নারী-পুরুষ সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা আমাদের শক্তি প্রয়োগ করে এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।”

এছাড়া, তিনি বাংলাদেশের নারীদের অদম্য ইচ্ছাশক্তির প্রশংসা করেন এবং বলেন, “দেশের নারীরা সাহসিকতার সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তারা দেশকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখছে।”

এছাড়া, তিনি নারীদের বিরুদ্ধে যে শক্তি মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে, তা মোকাবিলার জন্য দেশের সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশেদ, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরিনসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *