জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি-ইউএনও না রাখার পরিকল্পনা

জাতীয় দেশজুড়ে বাংলাদেশ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটকেন্দ্র নীতিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি), যার নেতৃত্বে আছেন এ এম এম নাসির উদ্দিন। সংশোধন হলে নির্বাচন-সংক্রান্ত কমিটির নেতৃত্ব থেকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সরিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

আগের নির্বাচন কমিশন, যার নেতৃত্বে ছিলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল, ইসির ক্ষমতা বৃদ্ধির পরিবর্তে কিছুটা সীমিত করেছিল। আগে জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইসির কর্মকর্তারা সরাসরি ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করতেন। কিন্তু আউয়াল কমিশন পৃথক কমিটি গঠন করে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে ডিসিদের এবং উপজেলা ও থানার ক্ষেত্রে ইউএনওদের কমিটির প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়।

তবে, ডিসি ও ইউএনওকে কমিটির প্রধান করার বিষয়ে ইসি কর্মকর্তাদের আপত্তি ছিল। তা সত্ত্বেও তৎকালীন ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম, আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ডিসি, ইউএনও এবং পুলিশকে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেন। এতে মহানগর বা জেলা পর্যায়ে ডিসিকে আহ্বায়ক এবং সিনিয়র জেলা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব করে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়। অন্যদিকে, উপজেলা ও থানার ক্ষেত্রে ইউএনওকে আহ্বায়ক ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ভোটকেন্দ্র নীতিমালা সংশোধিত হলে এসব কমিটিতে পরিবর্তন আসতে পারে।

সম্প্রতি নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে এক বৈঠকে ভোটকেন্দ্র নীতিমালা সংশোধনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে ইসি কর্মকর্তারা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার যুক্তি তুলে ধরেন। কমিটির প্রধান ও নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম কমিটির সদস্যদের আগের কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র নীতিমালা পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।

ওই সভায় এক জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি জানান, পাহাড়ি এলাকায় একবার ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশের পর ডিসির নির্দেশে কেন্দ্রটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এতে ভোটারদের মধ্যে আপত্তি ওঠে, কারণ নতুন স্থান থেকে ভোটকেন্দ্রে আসতে তাদের তিন দিন সময় লাগত। পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “এটি এখনো বিবেচনায় নেই, তবে নীতিমালা পর্যালোচনা করা হবে।” একইভাবে, ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ বলেন, “আমরা এটি পর্যালোচনা করব এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন করা হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *