সিনেমার সাফল্যের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে বিবেচিত হয় পাইরেসি। এটি নির্মাতাদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতির কারণও হয়ে দাঁড়ায়। প্রায়ই দেখা যায়, হলে মুক্তির কিছুদিনের মধ্যেই সিনেমার পাইরেটেড কপি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে হলে দর্শকসংখ্যা কমে যায়, প্রযোজক-নির্মাতাদের দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই পাইরেসিই একসময় আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল আমির খানের জীবনে! অকপটে স্বীকার করলেন তিনি—তাঁর আন্তর্জাতিক খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ার পেছনে পাইরেসির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
সম্প্রতি এবিপি নেটওয়ার্ক আয়োজিত ‘আইডিয়াস অব ইন্ডিয়া সামিট’ অনুষ্ঠানে নিজের ক্যারিয়ার ও সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন আমির। সেখানেই তিনি ফিরে যান ২০০৯ সালে, যখন তাঁর অন্যতম সেরা সিনেমা *থ্রি ইডিয়টস* মুক্তি পেয়েছিল। ভারতে সিনেমাটি দারুণ সাফল্য পায়, কিন্তু কিছুদিন পর চীন থেকেও খবর আসতে শুরু করে—সেখানে তরুণ প্রজন্ম *থ্রি ইডিয়টস* নিয়ে মুগ্ধ! অথচ তখনো চীনের হলে ছবিটি মুক্তি পায়নি। আসলে পাইরেসির মাধ্যমেই সিনেমাটি দেশটিতে পৌঁছে গিয়েছিল এবং ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।
আমির বলেন, “পাইরেসির কল্যাণেই চীনে আমার নাম ছড়িয়ে পড়ে। এক অর্থে, এটি আমাকে সেখানে তারকা বানিয়ে দিয়েছে। তবে এর পুরো কৃতিত্ব চীনের দর্শকদের, যাঁরা ভাষা ও সংস্কৃতির ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও *থ্রি ইডিয়টস* এতটা উপভোগ করেছিলেন।”
দুই বছর পর সিনেমাটি চীনের হলে মুক্তি পেলে, অনেকেই আগেই দেখে ফেললেও দর্শকের ব্যাপক সাড়া মেলে। সেই সাফল্যের পর চীনে ভারতীয় সিনেমার প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে, বিশেষ করে আমির খানের সিনেমার জন্য আলাদা উন্মাদনা তৈরি হয়। এরপর তাঁর *পিকে*, *দঙ্গল* ও *সিক্রেট সুপারস্টার* সিনেমাগুলোও সেখানে বিশাল জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
বিশেষ করে *সিক্রেট সুপারস্টার* চীনে প্রায় ২৫০ কোটি রুপি আয় করে, যা ভারতের বাইরের বাজারে ভারতের অন্যতম সফল সিনেমা হয়ে ওঠে। আমিরের ক্যারিয়ারে পাইরেসির এই ‘অপ্রত্যাশিত আশীর্বাদ’ তাঁর সিনেমাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিল!