কামরাঙ্গীরচরে বিএনপির দুই নেতার ‘ময়লা’ ছোড়াছুড়ি

জাতীয়

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ঢাকা সিটি করপোরেশনের কিছু এলাকায় বর্জ্য সংগ্রহ কাজের হাতবদল হচ্ছে। এবার রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকায় ময়লা-বাণিজ্য নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন বিএনপির ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের নেতারা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে ময়লা সংগ্রহে নতুন করে কার্যাদেশ পেয়েছে এফটি ডেভেলপার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। বাসা বা ফ্ল্যাট থেকে ১০০ টাকা ও দোকানপাট থেকে ৩০ টাকা মাসিক সেবামূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। কিন্তু বাসাবাড়ি ও দোকান থেকে টাকা সংগ্রহ শুরু করেছেন কামরাঙ্গীরচর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজি মো. মনির হোসেনের লোকজন।

এদিকে নিজেকে কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফটি ডেভেলপার্সের লোক দাবি করে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওয়ার্ড বিএনপির সদস্যসচিব জোবায়ের আহম্মেদ পলাশ। এতে তিনি লিখেছেন, তাঁর লোকজন কাজ শুরু করতে গেলে কামরাঙ্গীরচর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজি মো. মনির হোসেন এবং তাঁর ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ বাধা দেয়। জোবায়ের আহম্মেদের অভিযোগ, মনির হোসেন গায়ের জোরে ভুয়া রসিদের মাধ্যমে ময়লার বিল তুলছেন। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ডিএসসিসির ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত পুরান ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের আশ্রাফাবাদ, মমিনবাগ, আহসানবাগ, জঙ্গলবাড়ী, কুমিল্লাপাড়া, রহমতবাগ, বাগচান খাঁ, মুসলিমবাগ এলাকা নিয়ে। এ ওয়ার্ডের জনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার। ময়লা সংগ্রহ বাবদ এখানে প্রতিমাসে প্রায় ২০ লাখ টাকা ওঠে।

জানতে চাইলে জোবায়ের আহম্মেদ পলাশ বলেন, ‘এফটি ডেভেলপার্সের মালিক আবুল হাসনাতের সঙ্গে আমার লিখিত চুক্তি হয়েছে।…মনির জোরজবরদস্তি করে ময়লা সংগ্রহ করেন।’

অভিযোগের বিষয়ে হাজি মনির হোসেন বলেন, ‘আসলে টেন্ডারের কাজ পেয়েছে আওয়ামী লীগের এক লোক। সে জোবায়েরকে দিয়ে কাজ করাতে চায়।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এফটি ডেভেলপার্সের মালিক আবুল হাসনাত বিএনপিপন্থী পেশাজীবী সংগঠন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিইএব) সহ প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেন, ‘ময়লা নিয়ে তাঁদের বিশৃঙ্খলার কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ নিয়ে দুই দিন বৈঠক করেছি। আরেক দিন বসে সমাধান করে দেব।’

ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছিম আহমেদ বলেন, ‘ময়লা সংগ্রহে দ্বন্দ্বের অভিযোগ পেয়েছি। যে প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দিয়েছি, তারা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে আমাদের বিকল্প চিন্তা করতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *