আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতারা যেভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করে, বিএনপি নেতারাও সেভাবে পালিয়ে পালিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করছে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বিএনপি অবরোধের প্রতিবাদে সর্তক অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যেভাবে আল-কায়েদার প্রধান গোপন আস্তানা থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করেন, রুহুল কবির রিজভী সাহেবও ঠিক সেভাবে গোপন আস্তানা থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করছেন। অবরোধের নামে গাড়ি পোড়াতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ। এই হচ্ছে তাদের কর্মসূচি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনেকে প্রশ্ন রেখেছেন, রিজভী সাহেব গোপন আস্তানা থেকে কর্মসূচি দিচ্ছেন এবং গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে তারপরও কেন তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ দেশে মানুষের মধ্যে শান্তি, স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থা নিয়েছি। সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন দাবি উঠেছে প্রত্যেকটি সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার। যতদিন এই ধরনের চোরাগোপ্তা হামলা চলবে, ততদিন গ্রেপ্তার অভিযান চলবে। ২৮ তারিখ কিছু করতে না পেরে এখন গার্মেন্টসের অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের সরকার ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি করে সাড়ে ১২ হাজার টাকা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এক লাফে ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি। ওদের কোনো কোনো সংগঠন দাবি দিয়েছে ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে।
তিনি বলেন, একজন ছাত্র বিসিএস পাস করে যখন চাকরিতে জয়েন করে তখন বেতন পায় ২২ হাজার টাকা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার পর এতগুলো পরীক্ষা দিয়ে চাকরি শুরু করে ২২ হাজার টাকা দিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে পাশ করে ব্যাংকে চাকরি শুরু হয় ২০ হাজার টাকা করে। এখন আপনাদের দাবি ২৫ হাজার, এটা পুরাই অযৌক্তিক। আগে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাতে হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের মানুষ দেখেছে ২৮ তারিখ আমাদের লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত ছিল, আমরা কিন্তু সংঘর্ষে জড়াইনি। আমরা এক কদম সেদিকে যাইনি। আমরা যদি সেদিন একটু ইশারা দিতাম, তাহলে আমাদের নেতা কর্মীরা সেদিকে এগিয়ে যেতো, তাদের প্রতিহত করতো। ওরা গর্তের মধ্যে ঢুকে চোর ডাকাত যেভাবে কাজ করে, তার চেয়ে জঘন্য কায়দায়, পেট্রোল বোমা মেরে মানুষের উপর হামলা করছে। অনেকে দাবি করছে পুলিশ কেন তাদেরকে দেখা মাত্র গুলি করে না?
ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ২৮ তারিখ সাপকে যেভাবে পিটিয়ে মারে তার চেয়ে জঘন্য কায়দা একজন পুলিশকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। একজন সাংবাদিককে মাটিতে ফেলে সাপ পেটানোর মত পেটানো হয়েছে, এটি কোন সভ্য কাজ? এটি কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড হতে পারে না। সেদিন ৩২ জন সাংবাদিককে আহত করা হয়েছিল। আমাদের দলে নারী কর্মীদের কাপড় ধরে টানাটানি করেছিল, এরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চেয়েও জঘন্য। পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী মানুষকে হত্যা করেছে, কিন্তু মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে নাই। কিন্তু এরা গাড়ির মধ্যে গাড়ির হেলপার ঘুমিয়ে আছে সেই গাড়িতে আগুন ধরিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমাদের দেশে মানবাধিকার সংগঠন, বুদ্ধিজীবী, যারা মাঝেমধ্যে বিবৃতি দেন, তারা কেন আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, পুলিশ হত্যা নিয়ে বিবৃতি দিচ্ছেন না? আমাদের নারী-কর্মীদের হেনস্থা করা হলো, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, হাসপাতালে হামলা চালানো হলো, কেন এসব বিষয় নিয়ে কথা বলছেন না?
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান সিরাজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, সহসভাপতি হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোরশেদ হোসেন কামাল প্রমুখ।