মহাকাশ পর্যটনে প্রথম মানুষবাহী ফ্লাইট শনিবার। ভার্জিন গ্যালাকটিকের রকেটচালিত বিমানটি পাঠানো হচ্ছে পরীক্ষামূলকভাবে। প্রথমটিতে দুজন বৈমানিক যাচ্ছেন, যাদের একজন নাসার সাবেক মহাকাশচারী সিজে স্টারকৌ এবং গ্যালাকটিকের পরীক্ষামূলক উড্ডয়নসমূহের জন্য নিয়োজিত প্রধান বৈমানিক ডেভিড ম্যাকেই। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর স্পেসপোর্ট বা মহাকাশবন্দর থেকে যাত্রা শুরু এটির। বিবিসির প্রতিবেদনে এসেছে বিস্তারিত।
২০২১ সালে পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু হয়ে যাবে ঘোষণা দিয়েছে ভার্জিন গ্যালাকটিক। তার আগে এরকম তিনটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন হবে। গত ১৬ বছর ধরে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মহাকাশ মানুষবাহী ফ্লাইট পরিচালনার জন্য কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এখন চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। পরীক্ষামূলক তিনটি ফ্লাইটের একটিতে প্রতিষ্ঠানের প্রধান স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন নিজে যাবেন। ইতোমধ্যে বাণিজ্যিক ফ্লাইটে যাওয়ার জন্য ৬০০ জন টিকেট কেটে ফেলেছেন। গায়ক জাস্টিন বিবার এবং অভিনেতা লিওনার্ডো ডি ক্যাপ্রিও আছেন এদের মধ্যে।
নিউ মেক্সিকোর মহাকাশবন্দর স্পেসপোর্ট আমেরিকা তৈরিই হয়েছে মহাকাশে পর্যটন বিমান চালানোর জন্য।
প্রসঙ্গত, মহাকাশে পাঠানোর জন্য উড়োযানটি তৈরি হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ায়। প্রক্রিয়াটি আরো তরান্বিত হতে পারতো করোনা মহামারি না এলে।
যুক্তরাজ্যের স্পেস ইন্ড্রাস্টি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট উইল হোয়াইটহর্ন এই অগ্রগতিকে একটি মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বিবিসিকে জানান এটি খুবই নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী। এটি একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন। তবে তা করা সহজ ছিল না, বলেন তিনি।
২০১৪ সালের একটি দুর্ঘটনার পর যানটিতে কিছু পরিবর্তন আনতে হয়।
হোয়াইটহর্ন বলেন, আপনি যখন মহাকাশে চলে যাবেন, তখন বিষয়টা প্রতিযোগিতার না, তখন শুধু একে আরো নিরাপদ করার চেষ্টা।
তিনি আরো জানান, এখন মহাকাশ বিমান পরিচালনাকারী পাইলটদের মহাকাশের মতো পরিবেশ সৃষ্টি করে সেখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে ভার্জিন গ্যালাকটিক ইতোমধ্যেই ওই বিমানের যাত্রীদের কেবিনের ছবি ছেড়েছে। বিমানের আসনগুলো এমনভাবে করা হয়েছে যাতে মধ্যাকর্ষণের রকমফের অনুযায়ী সেটিকে সামঞ্জস্য করে নেওয়া যায়। বিমানের প্রত্যেকের সামনে একটি স্ক্রিন থাকবে, সেটিতে ফ্লাইটের সার্বক্ষণিক তথ্য পাওয়া যাবে। আর বারোটি বড় জানালা আছে, যাতে মহাশূন্যে চলে যাওয়ার পর সীটবেল্ট খুলে ভাসতে থাকার সময় বাইরে দেখার জন্য যাত্রীদের হুড়োহুড়ি করতে না হয়। বড় আয়নাও থাকছে কেবিনে, যাতে ওড়ার সময় নিজেদের দেখতে পারে তারা।