দুর্বল হয়ে সরে যাচ্ছে ‘মোখা’

দুর্বল হয়ে সরে যাচ্ছে ‘মোখা’

বাংলাদেশ
স্থলভাগের কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গে খানিকটা দুর্বল হয়ে পড়ছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল শনিবার (১৩ মে) রাতে সুপার সাইক্লোনের শক্তি অর্জন করেছিল। সেসময় এর সম্ভাব্য গতিপথের রেখা কক্সবাজারের সব উপকূলীয় এলাকা স্পর্শ করে যাচ্ছিল। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন দেশের মানুষ। সেন্ট মার্টিনেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। তবে সেই শঙ্কা কেটে গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা এখন কক্সবাজার ও মিয়ানমারের উপকূল পার হচ্ছে। বাতাস ও বৃষ্টিপাত চলছে।

মোখা আরও উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আজ রোববার বিকেলের মধ্যেই এটি কক্সবাজার ও উত্তর মিয়ানমার উপকূল পার হতে পারে। সকাল ১০টায় দেওয়া ১৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় আবহাওয়া অফিস।এদিকে, কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টির পর এক পর্যায়ে সুপার সাইক্লোনেও রূপ নিয়েছিল। পরে আবার গতি কমে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। আমরা আবহাওয়াবিদরা পূর্বাভাস দেওয়ার সময় সর্বোচ্চ শক্তি ধরেই আশঙ্কা প্রকাশ করি, যেন সতর্কতা অবলম্বনের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি এড়ানো যায়। মোখার ক্ষেত্রেও সে ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছি। কিন্তু আমরা সবসময় মনেপ্রাণে চাই যে আমাদের আশঙ্কাগুলো সত্যি না হোক। সেটি ঘটেছে।

বাংলাদেশ ও মায়নমারের মানুষের জন্য সুসংবাদ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্র যখন সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও মায়ানমারের মংডু জেলার মধ্যবর্তী স্থানের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা শুরু করেছে সৌভাগ্যক্রমে একই সময়ে সমুদ্রে ভাটা শুরু হয়েছে। ফলে এটি সমুদ্রেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। সাধারণত বঙ্গোপসাগরে প্রতি ৫ থেকে ১০ বছরে একটা সুপার-সাইক্লোন সৃষ্টি হয়। যদিও এবারে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ৩ বছরের মধ্যেই সুপার-সাইক্লোন মোখা সৃষ্টি হলো। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে ঝুঁকি একেবারেই কমে এসেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, টেকনাফ থেকে প্রায় ৫০-৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মায়ানমারের সিটুয়ির ওপর দিয়ে মোখা অতিক্রম করছে। ফলে আমাদের ঝুঁকি কমে এসেছে। আমাদের কক্সবাজার, টেকনাফ বা উপকূলীয় এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তবে মায়ানমারে কিছু অঞ্চলের জন্য ঝুঁকি আছে।

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন মডেল অনুসরণ ও পর্যালোচনা করে পূর্বাভাস প্রস্তুত করি। মডেলে এক সুতো পরিমাণ তফাৎ হলে সেটা হয়তো বাস্তবে দশ কিলোমিটার এদিক-সেদিক হয়। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে শতভাগ সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা কঠিন। এ ক্ষেত্রে তারতম্য হতেই পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *