সোহাগের জরিমানা বহন করবে না বাফুফে

সোহাগের জরিমানা বহন করবে না বাফুফে

খেলাধুলা
রাতভর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন বাফুফের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার। আচমকা এমন দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত ছিলেন না তিনি। ফুটবলের একটা বাজে সময় তার কাঁধে এসেছে ফুটবলের লাঙ্গল। দেশের ফুটবল যখন উত্তপ্ত কড়াইয়ে তখন বাফুফের প্রটোকল অফিসার এবং বাফুফে সভাপতির ব্যক্তিগত সহকারী ইমরান হোসেন তুষারের কাঁধে ছয় মাসের দায়িত্ব। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়ে কেমন অনুভব করছেন তুষার। বলছিলেন, ‘আমি সবার সহযোগিতা চাই। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।’

কাজের প্রয়োজনে আবু নাইম সোহাগকে দরকার হলে তিনি কথা বলবেন কিনা জানতে চাইলে তুষার বলেন, ‘সেটা সময়ে বুঝা যাবে। কথা বলার দরকার হবে না। বাফুফের আরো কর্মকর্তা রয়েছেন তারা বুঝবেন, কি করতে হবে।’

সোহাগকে দুই বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফিফা। সঙ্গে ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। ৩০ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে হবে। এখন এই টাকা কে দেবে। আবু নাইম সোহাগকে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি। আর নতুন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সোহাগ সাহেবের টাকা উনাকেই দিতে হবে। জরিমানার টাকা বাফুফে দেবে না। তার টাকা তাকেই দিতে হবে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘সোহাগের সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। তার যদি কোনো দেনা পাওনা থেকে থাকে সেটা নিয়ে যাবেন তিনি।’ তবে সময় মতো যদি সোহাগ নিজের জরিমানার টাকা নিজে না দেন তাহলে পরে তাকে ইন্টারেস্টসহ তা পরিশোধ করতে হবে।সোহাগের মতো পটু নয় তুষার। মাত্রই শুরু তার ক্যারিয়ার। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের হাজারো কাজ। নানা কাজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অনেক সময় লাগবে। তুষার সবার সঙ্গে মিলে কাজ করতে চান।

সোহাগের বিরুদ্ধে ফিফার অভিযোগ বাফুফে তদন্ত করবে। কবে থেকে কাজ শুরু হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ঈদের পর কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন বাফুফের সহসভাপতি মহিউদ্দিন মহি। আছেন আরো সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান, কাজী নাবিল, আতাউর রহমান মানিক, বাফুফের সদস্য জাকির হোসেন চৌধুরী, সত্যজিত দাস রূপু এবং ইলিয়াস হোসেন। এই কমিটিতে অডিট কমিটির তিন জন কর্মকর্তা রয়েছেন।

মহি জানিয়েছেন, যেখানে যেখানে কাজ করা দরকার সেখানে কাজ করা হবে। শেকড় থেকে তুলে আনতে হবে। তবে কিসের শেকড় থেকে তুলে আনতে চান তিনি সেটা পরিষ্কার করেননি। আগের দিন বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী জানিয়েছিলেন ফিফার ৫১ পৃষ্ঠার যে ব্যাখ্যা এসেছে সেটা খতিয়ে দেখতে হবে।’ বাফুফের সভাপতি সালাহউদ্দিন বলেছিলেন, ‘এই ঘটনা কেন ঘটেছে এবং কীভাবে ঘটেছে তা দেখা হবে।’

প্রশ্ন উঠছে ফিফা যেটা নিয়ে তদন্ত করে ফলাফল জানিয়ে দিল সেই একই বিষয় নিয়ে আবার বাফুফে কেন তদন্ত করবে। তদন্তে যদি বেরিয়ে আসে সোহাগ নির্দোষ তাহলে কি তার পদ ফেরত পাবে ? সোহাগ আর কখনো তার পদে ফিরে আসতে পারবেন না। ফিফার শাস্তি ভোগ করতে হবে পূর্ণ মেয়াদে। আর সোহাগ যেহেতু আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে আপিল করবেন সেটা ধোপে টিকবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। এছাড়া দুই বছর শাস্তি ভোগ করার পরও সোহাগ আর বাফুফেতে ফিরতে পারবেন না সেটা জানিয়ে দিয়েছেন সালাম মুর্শেদী।

তবে এরই মধ্যে ক্রীড়াঙ্গনে গুঞ্জন উঠেছে যে সালাম মুর্শেদীর নামেও নিষেধাজ্ঞার চিঠি আসতে পারে। ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ মেয়াদের হিসাবনিকাষে অসঙ্গতি পেয়েছিল ফিফা। সেটা মেলাতে গিয়ে ফিফা থেকে লোকজন এসেছিল। ফিফাও বাফুফের একাধিক ব্যক্তিকে চিঠি দিয়েছিল। সেই চিঠি পেয়েছিলেন সালাম মুর্শেদী। শুধু তাই নয়, সোহাগকে শাস্তি দিয়ে ফিফার পাঠানো ৫১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে সালাম মুর্শেদীর নামও রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *