পৃথিবীতে তৈরি হওয়া এ যাবৎকালের সবথেকে শক্তিশালী রকেট ‘স্টারশিপ’। সোমবার তার প্রথম মনুষ্যবিহীন যাত্রা শুরুর কথা ছিল। যদিও শেষ মুহূর্তে গিয়ে এর যাত্রা স্থগিত করা হয়। উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিট আগে জানানো হয়, রকেটটিতে থাকা একটি ভালভ জমে গিয়েছিল এবং ঠিকমত কাজ করছিল না। তাই কোন রকম ঝুঁকি না নিয়ে উৎক্ষেপণ পিছিয়ে দেবারই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে জানানো হয়, সোমবার সকালে মেক্সিকো উপসাগরের তীরবর্তী যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের বোকা চিকা থেকে উৎক্ষেপণ করার কথা ছিল রকেটটির। তার পর এটির ওপরের অংশটি পূর্ব দিকে যাবে এবং পৃথিবীর প্রায় পুরো চারপাশ জুড়ে একবার প্রদক্ষিণ করে সাগরে নেমে আসবে। প্রায় ১২০ মিটার উঁচু এই বিশালকায় রকেটটি তৈরি করেছে মার্কিন উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের স্পেসএক্স কোম্পানি।
এই রকেটটি মানুষের তৈরি সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী রকেট। এটি উৎক্ষেপণের সময় যে থ্রাস্ট তৈরি হওয়ার কথা তা এখন পর্যন্ত তৈরি হওয়া যে কোনো রকেটের দ্বিগুণ। ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এটি আবার উৎক্ষেপণের চেষ্টা করা হবে।মূলত এই রকেটের ওপরে মানবজাতির অন্যগ্রহে বসতি স্থাপনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বলেই প্রথম বারে কোনো ঝুঁকি নেননি মাস্ক।
বিশ্বের এযাবৎকালের বৃহত্তম রকেট উৎক্ষেপণ দেখতে বোকা চিকায় কয়েক হাজার লোক জড়ো হয়েছিল। আরো বহু লক্ষ মানুষে বসেছিলেন পৃথিবীর নানা প্রান্তে টিভির সামনে। কিন্তু এটি ব্যর্থ হলে মানুষের অন্য গ্রহে যাওয়া এবং বসতি স্থাপন বড় ধাক্কা খেতো। তাই স্পেসএক্স এ নিয়ে তাড়াহুড়ো করে কোন অকারণ ঝুঁকি নিতে রাজি হয়নি। উৎক্ষেপণের আগেই ইলন মাস্ক সবার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, মানুষ যেন এই প্রথম উৎক্ষেপণ থেকে খুব বেশি কিছু আশা না করেন। কারণ এসব রকেটের প্রথম যাত্রায় কিছু না কিছু একটা সমস্যা দেখা দেয়া মোটেও অস্বাভাবিক নয়।
তাছাড়া এই রকেট ইলন মাস্কের জন্যেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার বিশ্বাস, স্টারশিপের মাধ্যমে রকেট ব্যবসাকে তিনি সম্পূর্ণ পাল্টে দেবেন। এই রকেট তৈরি হয়েছে এমনভাবে যে তা বারবার ব্যবহার করা যাবে। ইলন মাস্কের স্বপ্ন হলো, অন্য গ্রহে মানুষের বসতি স্থাপন করতে যাবার উপযোগী রকেট তৈরি করা। এই রকেট বার বার ব্যবহার করা যাবে এবং একেকবারে ১০০-র বেশি মানুষকে মঙ্গলগ্রহে নিয়ে যেতে পারবে। এর উপযোগী করেই বানানো হয়েছে এই স্টারশিপ রকেটযানকে।