যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু দুই দিনের সফরে আজ শনিবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে ঢাকায় আসছেন। সফরকালে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাত ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর থেকে জানানো হয়েছে, ডোনাল্ড লু তার সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা করবেন।
ডোনাল্ড লু তিন দিনের ভারত সফর শেষে আজ রাতে ঢাকায় পৌঁছবেন। দিল্লিতে তিনি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র ফোরামে অংশ নেন। ভারত সফরে তিনি দেশটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জ্বালানি, বাণিজ্য, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার সুরক্ষা-সংক্রান্ত সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও মার্কিন দূতাবাসের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ এবং আগামী সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে তার এই সফরে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা থাকতে পারে। ওয়াশিংটনের কী বার্তা তিনি নিয়ে আসছেন তা জানতে বিভিন্ন মহলে কৌতূহল রয়েছে।
ঢাকায় অবস্থানকালে ডোনাল্ড লু সরকারের প্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। তিনি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করা ও অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা সম্প্রসারণ করার বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি শ্রম ও মানবাধিকার বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনা সম্পর্কে জানবেন।
এই সফর নিয়ে গতকাল শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধু দেশ। দেশটির সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ঢাকায় আসছেন। তার সঙ্গে আমরা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পাশাপাশি অন্যান্য ইস্যু নিয়ে আলোচনা করব। তারা যদি কোনো গঠনমূলক পরামর্শ দেয়, আমরা সেটি গ্রহণ করব।
ডোনাল্ড লুর সফরে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ে কী ধরনের আলোচনা হবে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার শেখানোর কিছু নেই। কারণ এটা আমাদের মজ্জাগত। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার আমাদের অন্তরে, সর্বক্ষেত্রে। গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের জন্য কারো সুপারিশ করার দরকার নেই। তবে কেউ যদি কোনো পরামর্শ দেয়, সেটা আমরা শুনব। যাচাই-বাছাই করব, সেটা আমাদের দেশের জন্য মঙ্গলজনক কি না। যদি ভালো হয়, তবে সেটা গ্রহণ করব।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের খুব একটা আপত্তি নেই বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে তিনি বলেন, আমরা এটা নিয়ে স্টাডি করছি। ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফোরামে যোগদান করলে যদি আমাদের লাভ হয়, তাহলে আমরা যোগদান করব।
প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড লু ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী মন্ত্রী হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি কিরগিজিস্তান এবং আলবেনিয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে কাজ করা ডোনাল্ড লু পাকিস্তানের পেশোয়ারে পলিটিক্যাল অফিসার (১৯৯২-১৯৯৪) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের নয়াদিল্লিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিশেষ সহকারী (১৯৯৬-১৯৯৭) এবং পলিটিক্যাল অফিসার (১৯৯৭-২০০০) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।