মিয়ানমারে মুখোমুখি জান্তা-আরাকান, নতুন সংঘাতের শঙ্কা

মিয়ানমারে মুখোমুখি জান্তা-আরাকান, নতুন সংঘাতের শঙ্কা

আন্তর্জাতিক
গত ২৭ মার্চ মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনী দিবসে এক অনুষ্ঠানে সামরিক বিরোধী যেকোনো তৎপরতা কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির সামরিকপ্রধান মিন অং হ্লাইং। এ অবস্থায় নিজেদের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করলে সামরিক বিরোধী যুদ্ধের হুমকি দিয়েছে আরকান আর্মি (এএ)।

মিয়ানমারের গণমাধ্যম দ্য ইরাবতি জানায়, গত মঙ্গলবার এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এএর মুখপাত্র খাইং থুখা বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সঙ্গে এএর উত্তেজনা বাড়ছে। তারা রাখাইন রাজ্যে হস্তক্ষেপ বাড়াচ্ছে। আমরা কোনো ধরনের সংঘর্ষের পক্ষে নই। উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা চলছে। জান্তা হস্তক্ষেপ অব্যাহত রাখলে আরাকান ফের অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। তাই জান্তার সতর্ক হওয়া দরকার।’

২০০৯ সালে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের কাচিন রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় এএ। আরাকান রাজ্যেই মূলত তাদের কার্যক্রম। ২০১৮ সাল থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সংঘর্ষ শুরু করে বিদ্রোহী গ্রুপটি। ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করে এএর রাজনৈতিক শাখা ইউনাইটেড লিগ অব আরাকান (ইউএলএ)। ২০২০ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে তাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক অস্ত্র বিরতিতে যায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
এরপর আরাকানে নিজেদের শাসন শক্তিশালী করতে থাকে এএ। আরাকানের একটা বড় অংশ এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। স্থানীয় রোহিঙ্গাদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করছে গ্রুপটি।

গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানের পর কাচিন, চিন, কায়া রাজ্যসহ মিয়ানমারের অন্য রাজ্যের পুরোনো বিদ্রোহীরা জান্তাবিরোধীদের স্বাগত জানায়। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর থেকে তুলনামূলক শান্ত রয়েছে আরাকান। সেখানে বলতে গেলে জান্তাবিরোধী কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।

তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, এই সময়টাকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে এএ। শক্তিশালী করছে নিজেদের আধিপত্য। তা ছাড়া বিভিন্ন দিক ভেবে জান্তাও স্পর্শকাতর আরাকানকে উত্তেজিত করতে চায়নি।

দেখা যাবে, যেসব জান্তা চড়াও হয়েছে, তা খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য। আর বৌদ্ধ হলেও এএর নেতৃত্ব ঐতিহাসিকভাবে কেন্দ্রের শাসনের বিরোধী। কেন্দ্রীয় শাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছে বামার জাতির লোকজন, যাদের শত্রুজ্ঞান করে আরাকানের বৌদ্ধরা।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা নিপীড়নে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকানের সাধারণ বৌদ্ধরা যোগ দিলেও সম্প্রতি রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে এএ। গত জানুয়ারিতে এশিয়া টাইমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এএর কমান্ডার ইন চিফ থোয়ান ম্রা নাইং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব মেনে নেওয়ার কথা জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *