নতুনরা আমাদের ন্যূনতম সম্মান দেখায় না -নূতন

নতুনরা আমাদের ন্যূনতম সম্মান দেখায় না -নূতন

বিনোদন
বাংলাদেশ সিনেমায় যে কজন নায়িকা তার নৃত্য প্রতিভা, সৌন্দর্য দিয়ে দীর্ঘদিন সিনেমা দর্শকদের মন জয় করেছেন তাদের একজন নূতন। ৮০ থেকে ৯০ দশক পর্যন্ত তিনি সিনেমার জগতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। সে সময় নাগনাগিনী নিয়ে সিনেমা তৈরি হলে নূতন ছিলেন অপরিহার্য। ‘পাগলা রাজা’ সিনেমায় তার ভ্রু নাচানো সেই সময় সিনেমা অঙ্গনে প্রশংসিত হয়েছিল।

এই অভিনেত্রীর নাচের দৃশ্য এত সাবলীল যে, তা অভিনয় পর্দায় মূর্ত হয়ে উঠতো। কেমন আছেন সোনালী দিনের সিনেমার এই নায়িকা? একরাশ অভিযোগের সুরে নূতন বললেন, আপনারা কি আর আমাদের খোঁজখবর নিতে চান! আপনারা তো এখন নবীন নায়িকাদের খবর নিতে বেশি আগ্রহী। আমি তো এখন ‘ডেড হর্স’। মাঝে মাঝে ভাবী সত্যি কি আমি এই চলচ্চিত্রের জন্য শ্রম দিয়েছি! আমার কি তিল পরিমাণও অবদান নেই চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য? কেন আপনি তো চলচ্চিত্রের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার অর্জন করেছেন।

বাংলাদেশ সরকার আপনার কাজের মূল্যায়ন করেছে। একজন শিল্পীর এরচেয়ে বেশি আর কি চাওয়া? জবাবে তিনি বলেন, একজন প্রকৃত শিল্পী কোনো পুরস্কারের জন্য অভিনয় করেন না। দর্শকদের ভালোবাসা প্রত্যাশা করেন। সাংবাদিকদের মূল্যায়ন প্রত্যাশা করেন। যেকোনো পুরস্কার সেই শিল্পীর দায়িত্ববোধ আরও বাড়িয়ে দেয়। আমি যে ইন্ডাস্ট্রিতে এত বছর ধরে কাজ করলাম, শ্রম-মেধা প্রদান করলাম কই সে সমিতি তো আমার খবর নেয় না। প্রাইভেট চ্যানেলগুলো ঘুরেফিরে চিহ্নিত কিছু শিল্পীর অনুষ্ঠান প্রচার করে।

কই নূতন নামে যে একজন নায়িকা বাংলাদেশে ছিলেন তার কোনো কিছু পর্দায় নেই। সিনেমা বিষয়ক কোনো অনুষ্ঠানেও আমি নেই। ঘুরেফিরে সেই একই মুখ ১০০ সিনেমা করেছে। সংখ্যা দিয়ে কি শিল্পীর মূল্যায়ন হয়। আমিতো দেশে বিদেশে ভিন্ন ভিন্ন ভাষার ছবিতে অভিনয় করেছি। পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, পাঞ্জাবীসহ অনেক সিনেমায় কাজ করেছি। সত্যি বলতে কি এখন নিজের ঢোল নিজেকেই পেটাতে হয়। কিন্তু আমার দ্বারা ঐসব সম্ভব না। আমি স্পষ্ট কথা বলতে অভ্যস্ত। বড়-ছোট সবাইকে শ্রদ্ধা করি। আজকাল কোনো অনুষ্ঠানে যান- দেখবেন নতুন শিল্পীরা আমাদের দেখে

ন্যূনতম সম্মান দেখায় না। আরে বাবা আগে তো শিল্পী হও তোমরা। তারপর একজন ববিতা, কবরী, শাবানার পর্যায়ে যাও! দুধের দাত পড়ে নাই- এখনই এ অবস্থা। নূতন আরও বলেন, চলচ্চিত্রের ইতিহাস লিখতে গেলে সোনালি যুগের শাবানা, ববিতা, কবরী, নূতন, অঞ্জনাদের নাম অবশ্যই লিখতে হবে, না হলে চলচ্চিত্রের ইতিহাস অসম্পন্ন রয়ে যাবে। বর্তমানে শিল্প-সাহিত্যে এত অবক্ষয়- ভাবতেই কষ্ট লাগে। এফডিসিতে যান চারপাশ শূন্য, কাজ নেই। বেশিরভাগ কর্মহীন।

কিন্তু মাশাআল্লাহ্ সমিতির অফিসগুলো রঙিন আলোয় ঝলমল করছে। এত দলাদলি, শিল্পীদের মাঝে এত বিভাজন- ভাবতেই কষ্ট লাগে। ফিল্ম পলিটিক্স অতীতেও ছিল কিন্তু এখনকার মতো এত নোংরা পলিটিক্স ছিল না। আপনার ব্যস্ততা কি নিয়ে বর্তমানে? এ নায়িকা বলেন, আমি আগাগোড়াই সিনেমার লোক। এর বাইরে আমার জানাশোনা খুবই কম। যেহেতু পুরনো শিল্পীদের নিয়ে বর্তমান প্রজন্ম কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না তাই তেমন কাজ নেই। অফুরন্ত অবসরই বলা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *