রাষ্ট্র সংস্কারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজপথে, চর্চায় এবং ঐক্যে একযোগে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সবাইকে একত্রিতভাবে জাতীয় সনদ প্রণয়নের কাজে অংশ নিতে হবে, যার মাধ্যমে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে এবং বাংলাদেশকে সম্ভাবনাময় একটি রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা যাবে।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, গত ৫৩ বছর ধরে জনগণ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে আসছে, তা বাস্তবায়নের পথ তৈরি করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য। আমরা যেন সম্মিলিতভাবে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের দিকে এগিয়ে যেতে পারি—এ আলোচনার মূল উদ্দেশ্য সেটাই।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরও উল্লেখ করেন, শুধু সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বা সুপারিশ যথেষ্ট নয়। রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সব শক্তির ঐক্যের মাধ্যমেই বাংলাদেশকে নতুনভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। শুধু কথায় নয়, চর্চা, অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা সেই প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি।’
আলী রীয়াজ তরুণদের অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে যে সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে, তা বাস্তবায়নে সকলকে একসঙ্গে পথ চলতে হবে। এই চেষ্টায় সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি এবং থাকব বলেও তিনি দৃঢ় প্রত্যয় জানান।
রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে মতামত সংগ্রহের বিষয়ে তিনি জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন স্প্রেডশিটের মাধ্যমে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে মতামত চেয়েছিল, যার মধ্যে ৩৫টি দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে। গতকাল পর্যন্ত ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে এবং আজ গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে ২০তম সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে আলী রীয়াজ বলেন, তখনকার গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে যে অকুতোভয় সংগ্রাম হয়েছিল, তা দেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের নতুন ধারা সৃষ্টি করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী সময়ে এক অনন্য গণ-অভ্যুত্থানের সূচনা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার এবং উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং ড. ইফতেখারুজ্জামান।
