টেস্ট বা সীমিত ওভারের ক্রিকেট—বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটিংয়ের সমস্যার যেন কোনো সমাধান হচ্ছে না। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং এ বছরের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দেখা গেছে একই রকম ব্যাটিং সমস্যা। সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টে দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণ ছিল দায়িত্বজ্ঞানহীন শট।
ভালো শুরু করলেও ধারাবাহিকতা না থাকায় বারবার ব্যর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ। টপ অর্ডারের অস্থিরতা দলের উন্নতির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিপক্ষ বোলারদের কৃতিত্বের চেয়ে বেশি দায় ব্যাটারদের। সিলেটের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় এবং সাদমান ইসলাম নিজেদের উইকেট বিলিয়ে দেন। শুধু টপ অর্ডারের ব্যাটাররাই নন, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মুশফিকুর রহিমও বাজে শট খেলেছেন এবং আউট হয়েছেন। দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগে বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আর এই ধরনের উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার পরিস্থিতি দেখতে চান না।
আগামীকাল চট্টগ্রামের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি হবে। সিরিজে টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচে জয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজ চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলনে সিমন্স বলেন, “আমরা জানি, প্রথম ইনিংসে আমরা এক ইউনিট হিসেবে ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি এবং নিজেদের সমস্যায় ফেলেছি। আমরা এমন ইতিবাচক ক্রিকেট খেলতে চাই, যেখানে দিনে ২০০ রান করে থেমে যাওয়া নয়। ‘ট্রানজিশন’ শব্দটা শোনা যাচ্ছে, আমাদের যেখানে পৌঁছাতে হবে, সেখানে পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে আমি খেলোয়াড়দের বলেছি, ঢিলেঢালা শট এবং সফট ডিসমিসাল কমাতে হবে। এটা এক, দুই বা তিন টেস্টের জন্য চলতে দেওয়া যাবে না।”
বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটির সমস্যা নতুন নয়। একজন ব্যাটার থেকে ভালো ইনিংস আশা করা হয়ে গেছে “হ্যালির ধূমকেতুর” মতো। কেউ কেউ থিতু হয়ে আউট হচ্ছেন। সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটির দুই ইনিংসে মোট রান ছিল ৪৪, যেখানে জিম্বাবুয়ের উদ্বোধনী জুটির রান ছিল যথাক্রমে ৬৯ ও ৯৫।
২৩ এপ্রিল সিলেট টেস্টের শেষ দিন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দ্বিতীয় টেস্টের দল ঘোষণা করেছে। জাকির হাসানকে বাদ দিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের দলে নেওয়া হয়েছে এনামুল হক বিজয়কে, যিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে দাপুটে পারফরম্যান্স করছেন। সিমন্স বলেন, “আমরা এমন ক্রিকেটার বাছাই করি, যারা নিজেদের গতি অনুযায়ী খেলে। আক্রমণাত্মক মানসিকতা মানে প্রতি ওভারে পাঁচ রান তুলতে হবে না; বরং উইকেটের মাঝে দৌড়ানো, মনোভাবের প্রকাশ এবং ফিল্ডিংয়ের মানসিকতায় সেটা প্রকাশ পায়। কখনও পাঁচ রান গড়েও ব্যাটিং চলবে, আবার কখনো দুই বা তিন রান করেও সন্তুষ্ট থাকতে হবে।”