জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের শহীদ জসীম উদ্দিনের মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ ঢাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবার জানিয়েছে, মেয়েটি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শনিবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেক ৬ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত কলেজছাত্রীর গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর দুমকিতে। জানা গেছে, গত ১৮ মার্চ সে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিল।
আদাবর থানার ওসি এস এম জাকারিয়া মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ জানায়, মেয়েটির মরদেহ বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
প্রতিবেশী ও স্থানীয়দের ভাষ্য, রোববার বিকেলে মায়ের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল তার। এজন্য শনিবার মার্কেট থেকে নতুন কিছু কাপড়ও কিনে এনেছিল। রাত ৮টার দিকে মা রুমা বেগম ছোট মেয়েকে মাদ্রাসায় দিয়ে আসতে গেলে, সেই ফাঁকে মেয়েটি নিজের রুমে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে স্থানীয়রা মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নিহতের মামা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমার বোন হারিয়েছিল স্বামীকে, আজ হারাল মেয়েকেও। ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তরা জামিনে ছাড়া পেয়েছে। এখন আমরা কোথায় যাব, কার কাছে বিচার চাইব?’
১৮ মার্চ সন্ধ্যায় পিরোজপুরের পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নে বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়ি ফেরার পথে শহীদ জসীম উদ্দিনের মেয়েকে অনুসরণ করে অভিযুক্ত সাকিব ও সিফাত। পরে তাকে মুখ চেপে ধরে জলিল মুন্সির বাগানে নিয়ে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। ঘটনাটি গোপন রাখতে মেয়েটির নগ্ন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয় তারা।
ঘটনার পর দুমকির ইউএনও আবুজর মো. ইজাজুল হক নিশ্চিত করেন, মেয়েটির বাবা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ছিলেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাসও দেওয়া হয়।
২০ মার্চ মেয়েটি পরিবারের সঙ্গে পরামর্শ করে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে। একইদিন সন্ধ্যায় তা মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়। এরপর পুলিশ ১৭ বছর বয়সী এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে, পরদিন আরেকজনকে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা থেকে আটক করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।