গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আইডিএফের হামলায় আরও ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার পুরো উপত্যকাজুড়ে আইডিএফের নির্বিচার হামলায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা হামাস পরিচালিত গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য উদ্ধৃত করে এ খবর জানিয়েছে।
আজ রোববারও গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে আল-জাজিরা জানায়, মধ্য গাজার দেইর আল বালাহর সাবরা এলাকায় এক আবাসিক ভবনে বিমান হামলায় একই পরিবারের ১০ জন নিহত হয়েছেন। তবে ধারণা করা হচ্ছে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
নিরাপদ ঘোষিত আল-মাওয়াসি এলাকাতেও হামলা চলছে। আজ রোববার সেখানে আইডিএফের ড্রোন হামলায় আরও তিনজন নিহত হয়েছেন।
রাফাহতেও একই রকম তাণ্ডব চলছে। হামলার ভয়াবহতার কারণে সেখানকার হতাহতের সঠিক তথ্য এখনো মেলেনি। সবচেয়ে তীব্র হামলা হচ্ছে নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে। এদিকে, অবরোধের কারণে গাজায় তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। দেড় মাসের অবরোধের ফলে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা আরও বেড়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করেছে, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
নেতানিয়াহুর প্রশাসনের অমানবিক অবস্থানের বিরুদ্ধে এবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ ইসরায়েলিরাও। গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাজধানী তেল আবিবসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে।
প্রায় ১৫ মাসের যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টায় ইসরায়েল ও হামাস তিন ধাপের একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। গত ১৯ জানুয়ারি প্রথম ধাপ কার্যকর হয়। তবে প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপের আলোচনায় নেতানিয়াহুর গড়িমসি দেখা দেয়। সমালোচকেরা বলছেন, নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধবিরতি ব্যর্থ করে পুনরায় হামলা শুরু করতে চেয়েছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবার নতুন করে হামলা শুরু করে আইডিএফ। গত এক মাসে সেখানে ২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সর্বাত্মক অভিযান শুরুর পর থেকে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি মানুষ।